কৃষি ও প্রকৃতি

মিরসরাইয়ে অ্যাভোকাডো চাষে সফল ওমর শরীফ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে প্রথমবারের মতো পশ্চিমা ফল অ্যাভোকাডোর পরীক্ষামূলক চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মো. ওমর শরীফ। গত বছর থেকে গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। আগামীতে তিনি চাষের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি চারাও বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

জানা গেছে, অ্যাভোকাডো একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ভেষজগুণ সম্পন্ন সুস্বাদু ফল। বাংলাদেশে চাষ উপযোগী সম্ভাবনাময়ী বিদেশি এ ফল। দেশে যেসব বিদেশি ফলের চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তার মধ্যে অ্যাভোকাডো অন্যতম। এটি অন্য ফলের তুলনায় মিষ্টি কম হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপযোগী। ফলের আকার অনেকটা পেয়ারা বা নাশপাতির মতো। একেকটা ফলের ওজন প্রায় ৪০০-৮০০ গ্রাম হয়। ফলের ভেতরে বেশ বড় ডিম্বাকার বীজ থাকে। আহার্য অংশ মাখনের মত মসৃণ, হালকা মিষ্টি স্বাদের। পেঁপের মতো কাঁচা-পাকা ফল, সবজি, ভর্তা, সালাদ, শরবতসহ বিভিন্নভাবে খাওয়ার সুবিধা আছে। টোস্টে মাখনের পরিবর্তে অ্যাভোকাডো ক্রিম দিয়ে খাওয়া, সালাদে, স্যান্ডুইচে মেয়নেজের পরিবর্তে অ্যাভোকাডোর ক্রিম দিয়ে আহার করা স্বাস্থ্যসম্মত।

আরও পড়ুন: বান্দরবানে ড্রাগন চাষে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন

জোহরা এগ্রো ফামর্স অ্যান্ড নার্সারিতে গিয়ে দেখা গেছে, গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী ফল অ্যাভোকাডো। ফলগুলো এখনো পুরোপুরি পরিপক্ব হয়নি, কিছুদিন পর আরও বড় হবে। বড় হলে তারপর এগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করবেন বাগান মালিক।

Advertisement

শুধু অ্যাভোকাডো নয়, ওমর শরীফের বাগানে আছে অনেক দেশি-বিদেশি ফলের গাছ। আছে বর্তমান বিশ্বের দামি মিয়াজাকি (সূর্যডিম), কিউজাই, ব্যানানা ম্যাংগো, ইন্দোনেশিয়ান ব্রুনাই কিং, কিং অব চাকাপাত, আলফেনসো, আলফানচুন, থাই ব্যানানা। আছে দারচিনি, লবঙ্গ, পুলসান, রাম্বুটান, আপেল, তেঁতুল, থাই সফেদা, চেনাক ফ্রুট, থাই বেরিকেডেট মাল্টা, বারোমাসি মাল্টা, চাইনিজ কমলা, দার্জিলিং কমলা, চায়না-৩ লিচু, লটকন, ভিয়েতনামি নারিকেল, শ্রীলঙ্কান নারিকেল।

আরও পড়ুন: পাহাড়ে লটকন চাষে সফলতার স্বপ্ন কৃষকদের

জোহরা এগ্রো ফামর্স অ্যান্ড নার্সারির মালিক মো. ওমর শরীফ বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০ পিস অ্যাভোকাডো গাছের চারা সংগ্রহ করে আমার বাগানে লাগানো হয়েছে। গত বছর থেকে কয়েকটি গাছে ফলন আসতে শুরু করে। এবছর তিনটি গাছে ফল এসেছে। তিন গাছে প্রায় ১২০ কেজি ফল হবে। কিছুদিন পর এগুলো সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হবে। আমার নার্সারিতে থাইল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা অ্যাভোকাডো চারা বিক্রি করা হবে।’

মিরসরাই উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, ‘উপজেলায় অ্যাভোকাডো চাষের বিষয়টি আমার জানা নেই। ওমর শরীফের বাগানে গিয়ে দেখে আসবো। এখন অনেকে বিদেশি পুষ্টিকর ফলের চাষ করেন। অ্যাভোকাডো ফল পুষ্টিগুণে ভরা। এ ফল বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধ করে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের পথ্য হিসেবে কার্যকর।’

Advertisement

এসইউ/এএসএম