বয়স্কদের মধ্যেই এখন আর শুধু হৃদরোগ সীমাবদ্ধ নেই, অনেক কমবয়সীরাও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করছেন। বর্তমানে কমবয়সীদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এর পেছনের কারণ হলো অনিয়মিত জীবনযাপন।
Advertisement
ফলে কমবয়সেও বাড়ছে ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইডের অসুখ। এসব কারণেই হৃদযন্ত্রের আশপাশে জমছে মেদ। শরীরে বাসা বাঁধছে ফ্যাটি হার্টের মতো রোগ।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের একমাস আগে নারীর শরীরে দেখা দেয় যে লক্ষণ
ফ্যাটি হার্ট কী?
Advertisement
ফ্যাটি লিভার নামের সঙ্গে বর্তমানে অনেকেই পরিচিত এমনকি সচেতনও বটে। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত মদ্যপানের অভ্যাস আছে তাদের অনেকেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভোগেন।
তবে ফ্যাটি হার্ট সম্পর্কে সচেতনতা এখনো ততটা নেই। এক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের চারপাশে মেদের একটি আস্তরণ পড়তে শুরু করে। এই আস্তরণ ভারি হয়ে গেলে শরীরে প্রদাহের সৃষ্টি হয়।
এ কারণে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকে। ফ্যাটি হার্ট থাকলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাট্যাকের ঝুঁকি বাড়ায় দ্বিগুণ। হৃদযন্ত্রের অন্যান্য রোগও হতে পারে ফ্যাটি হার্টের কারণে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক কেন হয়? লক্ষণ দেখলে দ্রুত যা করবেন
Advertisement
কাদের ঝুঁকি বেশি?
স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন হৃৎপিণ্ডের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমার ঝুঁকি বাড়ায়। কিছু গবেষণা জানাচ্ছে, বয়স, শরীরের গঠন ও আকৃতিও ফ্যাটি হার্টের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এই সমস্যা।
মেনোপজ জার্নালে প্রকাশিত ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মেনোপজের বিভিন্ন পর্যায়ে ৫২৪ জন নারীর শারীরিক পরীক্ষা ও বুকের স্ক্যানের ডেটা বিশ্লেষণ করেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে হার্টে চর্বি জমার সমস্যা বেশি হয়। বিশেষ করে মেনোপজের পরে ফ্যাটি হার্ট ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকির মধ্যে ব্যাপক যোগসূত্র আছে বলে জানান গবেষকরা।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও ফেইলিওরের মধ্যে পার্থক্য
এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, মেনোপজের অবস্থা ও আর্থ-সামাজিক কারণে ফ্যাটি হার্টের সমস্যা বাড়ে। গবেষণায় দেখা যায়, নারীরা সামগ্রিকভাবে যত বেশি চর্বি বহন করে, তাদের হৃদয়ের চারপাশেও তত বেশিই চর্বি জমে।
হৃদরোগের লক্ষণ কী কী?
১. বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি২. মাথা ঘোরা৩. অজ্ঞান হওয়া৪. বুকের মধ্যে ধড়ফড় করা৫. হালকা মাথাব্যথা৬. হার্টবিট (টাকিকার্ডিয়া) ওঠানামা৭. নিঃশ্বাসের দুর্বলতা৮. ধীর হৃদস্পন্দন (ব্র্যাডিকার্ডিয়া)।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের মারাত্মক লক্ষণ ও দ্রুত করণীয়
এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যুদও ফ্যাটি হার্টের সমস্যায় প্রথমদিকে তেমন কোনো উপসর্গ টের পাওয়া যায় না। তবে হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে ফ্যাটি হার্টের ঝুঁকি।
ফ্যাটি হার্টের সমস্যা থাকলে তা ধরা পড়ে সিটি স্ক্যানে। কিন্তু সাধারণত ফ্যাটি হার্ট আছে কি না, তা দেখার জন্য সিটি স্ক্যান করা হয় না। অন্যান্য সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকরা বলেন, সিটি স্ক্যান করতে। তখন ধরা পড়তে পারে ফ্যাটি হার্টের সমস্যা।
হার্টের এই রোগ প্রতিরোধে করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়া-দাওয়া ও শরীরচর্চা এই দু’দিকেই বিশেষ নজর দিতে হবে। যদি একদমই শরীরচর্চার অভ্যাস না থাকে, তাহলে ফ্যাটি হার্টের ঝুঁকি বাড়ে।
সূত্র: মায়োক্লিনিক/হেলথ
জেএমএস/এমএস