দেশজুড়ে

বর্ষায় নবরূপে সেজেছে ‘ফুকির মুরং ঝরনা’

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাগলির মা পাড়ায় অবস্থিত ফুকির মুরং ঝরনা। আশপাশের ছোট-বড় কয়েকটি ঝরনা থেকে অবিরাম ধারায় পানির প্রবাহ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ এবং পাহাড় ও বনবেষ্টিত এই ঝরনা যেন প্রকৃতি দেবীর এক অপূর্ব সৃষ্টি। তাই এখানে প্রতিদিনই প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় বাড়ছে। আর এ বর্ষায় নবরূপে সেজেছে ঝরনাটি।

Advertisement

কাপ্তাই উপজেলার ঘাগড়া-বড়ইছড়ি সড়কের বটতলি এলাকার পূর্বপাশ ধরে তিন কিলোমিটার পাহাড়ি পথ আর ছড়া পার হয়ে স্থানটিতে পৌঁছানো যায়। আশপাশে শতশত তনচংগ্যা পরিবারের বসবাস। পথিমধ্যে পাগলি মা পাড়া, পাগলি মধ্যম পাড়া গ্রাম পার হয়ে পাগলি ওপর পাড়ায় এই ঝরনার দেখা মিলবে। স্থানটিতে পৌঁছাতে পর্যটকরা পাহাড় থেকে বয়ে চলা ছড়ার পানির বহমান ধারা উপভোগ করতে পারবেন। আশপাশে চোখে পড়বে পাহাড়ি গাছ গাছালি এবং ছোট ছোট পাহাড়ি ঘর।

আরও পড়ুন: জনপ্রিয় হচ্ছে রাঙ্গামাটির ঘাগড়া ঝরনা

ওই এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক সূর্য্যসেন তনচংগ্যা বলেন, আমরা দাদুদের মুখ থেকে শুনেছি আজ থেকে শতবছর আগে এই পাহাড়ে এক সাধক বা ফকির ধ্যান করতো। সেখানে লোকজন পূজা দিতো, মানত করতো। ফকির ধ্যান করতো বলে স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছে ফুকির মুরং বা ফকির কুয়া বা ফইরা মুরং ঝরনা।

Advertisement

ঝরনা দেখতে আসা পর্যটক খন্দকার মাহমুদুল হক মুরাদ বলেন, অপূর্ব এই ফকিরা মুরং ঝরনা যেন প্রকৃতি দেবীর অপূর্ব নিদর্শন। বিশেষ করে ঝরনায় আসার সময় ঝিরিঝিরি শব্দে পানির প্রবাহ ধারা আমাদের মুগ্ধ করেছে।

আরও পড়ুন: রহস্যময় ধুপপানি ঝরনা পাহারা দেন এক সাধু

ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার বলেন, স্থানীয় ভাষায় এটা ফইরা মুরং ঝরনা নামে পরিচিত। যদি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ জায়গাটির উন্নয়ন করা হয় তাহলে পর্যটক আগমন আরও বাড়বে।

৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তপন তনচংগ্যা বলেন, এই ঝরনা দেখতে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে। তবে আমরা মাঝেমাঝে দেখতে পাই, অনেক পর্যটক নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে এবং আশপাশের বাসিন্দাদের গাছের ফলমূল নষ্ট করে। আমরা এলাকাবাসী এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে পর্যটকদের অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই যেন এই ঝরনায় আসার পথটুকু মেরামত করা হয় এবং এখানে ওয়াশব্লক নির্মাণ করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঝরনার রানি ‘খৈয়াছড়া’ দেখতে কখন যাবেন?

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমন দে বলেন, এই ঝরনায় আসার পথে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছোট ছোট ঘর, ঝিরি থেকে বয়ে যাওয়া হিমশীতল পানি সত্যিই উপভোগ্য। প্রধানমন্ত্রী কমিউনিটি বেজড ট্যুরিজমের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের আত্মসামাজিক উন্নয়নের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তার আলোকে এই ফকির মুরং ঝরনার সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে অবকাঠামো নির্মাণ করে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা হবে।

সাইফুল উদ্দীন/এমআরআর/এএসএম