বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স কোম্পানি অ্যামাজন। যেখানে চাকরি পাওয়াটা অনেকটা স্বপ্নের মতোই। দুনিয়া খ্যাত সেই অ্যামাজনে চাকরি করেন সাতক্ষীরার যুবক নূর হোসেন। এরইমধ্যে কর্মদক্ষতা দিয়ে নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন তিনি। বিশ্বের এত বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করায় প্রশংসা কুড়িয়েছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সকল স্তরের মানুষের।
Advertisement
নূর হোসেনের জন্মস্থান সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামে। ঘোনা গ্রামের আয়ূব হোসেন ও মনজিলা বেগমের ছেলে নূর হোসেন।
নূর হোসেন প্রাথমিক স্কুল জীবন শেষ করেছেন সাতক্ষীরা সদরের কাথন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর ঘোনা ইউনিয়ন বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সুনামের সঙ্গে কৃতকার্য হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি বর্তমানে সৌদি আরবের King Saud bin Abdulaziz University for Health Sciences বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন। পড়াশুনার পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে স্টো- কোয়ালিটি হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।
নূর হোসেন জানান, জীবনের শুরুটা অনেক কষ্টের ছিল। বাবা-মা এবং ছোট ভাইকে নিয়ে গ্রামের পরিবেশে বেড়ে উঠেছি। বাবা ছিলেন কৃষক। খুব অভাব অনটনের ভেতর দিয়েও নিজের পড়াশুনাটা ঠিকঠাক চালিয়ে নিয়েছি। পড়াশুনার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নটাকে বুকের মধ্যে লালন করেছি প্রতিমুহূর্তে। অ্যামাজনে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ত্যাগ করে মধ্যপ্রাচ্যের রিয়াদ শহরে আসি। দীর্ঘ সাধনার পর অ্যামাজনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। বর্তমানে অ্যামাজনের স্টো-কোয়ালিটিতে কর্মরত আছি। ২০২৫ সালের মধ্য অ্যামাজনের এইচআর হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। বিশ্বের কাছে নিজের জন্মভূমিকে আরও ভালোভাবে তুলে ধরাটাই তার উদ্দেশ্য বলে জানান তিনি।
Advertisement
নূর হোসেনের বাবা আয়ূব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, নূর হোসেন অনেক কষ্টের মধ্যে বেড়ে উঠেছে। অন্যদের মতো ঠিকঠাক পোশাক কিংবা পড়াশুনা কোনোটাই দিতে পারিনি। তবে তার মনোবল ছিল। স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে আরাম আয়েশ থেকে দূরে রেখেছে। বর্তমানে বিশ্বের বড় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে। খুশি আর আনন্দে বুকটা ভরা গেছে। মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরাটাই তার স্বপ্ন।
নূর হোসেনের মা মনজিলা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ছেলের এতবড় অর্জনে মা হিসেবে আমি গর্ব করি। আমাদের পরিবারটা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। নূর হোসেনের বাবা পেশায় একজন কৃষক। তার সামান্য উপার্জনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। নূর হোসেনের প্রচেষ্টা আর মনোবল তাকে এতদূর নিয়ে গিয়েছে। সে আরও ভালো অবস্থানে কাজ করবে একইসঙ্গে দেশ ও সমাজের কল্যাণকর কাজের সঙ্গে থাকবে।
সাতক্ষীরা সদরের ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের জাগো নিউজকে বলেন, আমার ইউনিয়নের একটি ছেলের এমন অর্জন সত্যিই প্রশংসার। গ্রামের পরিবেশে বেড়ে ওঠা একটি ছেলের বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানে কাজ করাটা স্বপ্নের মতো। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
এফএ/এএসএম
Advertisement