টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে সবকয়টি মূল্যসূচক। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
Advertisement
এদিন মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে তথ্য প্রযুক্ত বা আইটি খাত এবং খাদ্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। এর সঙ্গে এই দুই খাতকে সঙ্গ দিয়েছে গত কয়েক মাস ধরে শেয়ারবাজারে আলোচনায় থাকা বিমা খাত। অবশ্য বিমা খাতে দাম বাড়া এবং কমার সংখ্যা প্রায় সমান।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনর শুরু থেকেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে আইটি ও খাদ্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই দুই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
আইটি ও খাদ্য খাতের পাশাপাশি লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে। তবে লেনদেনের শেষদিকে কিছু বিমা কোম্পানির দাম বাড়ার প্রবণতায় ভাটা পড়ে। অবশ্য এর মধ্যে তালিকাভুক্ত প্রায় অর্ধেক বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
Advertisement
দিনের লেনদেন শেষে আইটি খাতের ১০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এ খাতের একটি প্রতিষ্ঠানেরও শেয়ারের দাম কমেনি। খাদ্য খাতের ১৩টির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং কমেছে ৪টির। আর বিমা খাতের ২৭টির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ২৩টির দাম কমেছে।
এই তিন খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার দিনে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ১১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬০টির। আর ১৭০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৪৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৬৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১১৯ কোটি ২০ লাখ টাকা।
Advertisement
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪ কোটি ৭৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার। ১৯ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জনতা ইন্স্যুরেন্স, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, এমারেল্ড অয়েল, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৭০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৪টির এবং ৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
এমএএস/কেএসআর/এমএস