পানিতে ভাসছে ঢাকা-বরিশাল-ঢাকাগামী লঞ্চ। পাড়ে বসে রিমোট দিয়ে লঞ্চের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করছে এক বালক। আর চারপাশে জড়ো হয়ে কিশোরের এ কাণ্ড দেখছেন উৎসুক জনতা।
Advertisement
খুদে এ বিজ্ঞানীর নাম হিমেল মিয়া। তার তৈরি লঞ্চই পানিতে ভাসছে। তবে শুধু লঞ্চ নয়; যাত্রীবাহী বাস, উড়োজাহাজ, ট্রাক, ট্রাক্টর, স্পিডবোট, অটোরিকশাসহ অসংখ্য যানবাহন তৈরি করে আলোচনায় এসেছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হিমেল।
হিমেল মিয়া কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের গজারিয়া বিলপাড় গ্রামের দুবাই প্রবাসী বোরহান উদ্দিনের ছেলে। সে স্থানীয় শিকদার একাডেমির অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
আরও পড়ুন: কৃষিকাজে ব্যবহার উপযোগী ড্রোন তৈরি করলেন দিনাজপুরের সবুজ
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের প্রতিভা কাজে লাগিয়ে ককশিট ও কার্টন দিয়ে একের পর এক যানবাহন তৈরি করছে হিমেল। এসব যানবাহন রিমোটচালিত। টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে এসব যানবাহন তৈরি করে হিমেল।
গজারিয়া বিলপাড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট বসতঘরের এক কোনায় একটি টেবিলে বসে যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যস্ত হিমেল। ঘরের এক কোণে টিনের বেড়ার সঙ্গে ককশিট দিয়ে তৈরি ওয়্যারড্রবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে তার তৈরি বিভিন্ন বিভিন্ন যানবাহন। নিজের তৈরি এসব যানবাহন ও যন্ত্রপাতি বাড়ির উঠানে সাজিয়ে রেখে চালিয়ে দেখায় হিমেল।
আরও পড়ুন: ইংরেজিতে লিখতে পারে সনেট, বের হয়েছে বই
হিমেল জানায়, ককশিট ও কার্টন দিয়ে সে উড়োজাহাজ, লঞ্চ, স্পিডবোট, বাস, ট্রাক, ট্রাক্টর, লরি, রিকশা, অটোরিকশা, ধান ভাঙানোর মেশিনসহ অন্তত ৪০টি যানবাহন তৈরি করেছে। ককশিটের তৈরি এসব যানবাহন চালানোর জন্য একটি ৬ ভোল্টের ব্যাটারি, একটি চার্জার ও একটি রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার করা হয়েছে। তবে টাকার অভাবে সে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ব্যাটারি-চার্জার কিনতে পারছে না।
Advertisement
আরও পড়ুন: ভুট্টা থেকে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ
হিমেলের মা মোছা. খোশনা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ছেলে হিমেল নিজে নিজেই অনেক কিছু তৈরি করছে। টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সে এগুলো তৈরি করে। আমাদের স্বপ্ন সে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। ভালো মানুষে দেশের উন্নয়নে কাজ করবে।’
চাচা আনিছুর রহমান বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে হিমেল ভালো কিছু করতে পারবে। একদিন সে দেশ এবং জাতির উন্নয়নে কাজে লাগতে পারবে।
দাদা আব্দুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি সহায়তা পেলে এসব যানবাহনকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে পারবে হিমেল।
আরও পড়ুন: বিশ্বে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম মানব ভ্রুণ তৈরির দাবি
এ বিষয়ে শিকদার মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘হিমেলকে নিয়ে আমরা গর্বিত। তার এ আবিষ্কারগুলো যদি বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় তাহলে দেশের উন্নয়ন কাজে লাগবে। আগামীতে বিজ্ঞানমেলায় তার এসব আবিষ্কার প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবো।’
বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম হুসাইন বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানলাম। তার কাজগুলো দেখে যদি মনে হয় সরকারি সহায়তা প্রয়োজন তাহলে তাকে সহায়তা করতে চেষ্টা করবো।’
এসআর/এএসএম