ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোককে রাসমুসেন বলেছেন, ড্যানিশ সরকার কোরআন পোড়ানো রোধে আইনি উপায় খুঁজে বের করবে, যাতে করে অন্যান্য দেশের দূতাবাসের সামনে কেউ কোরআনের কপিতে আগুন দিতে না পারে।
Advertisement
এক বিবৃতিতে রোববার (৩০ জুলাই) ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে পবিত্র ধর্মীয়গ্রন্থ পড়ানোর মতো বিক্ষোভ চরমপন্থিদের উদ্দেশ্য হাসিল করলেও, জনসাধারণের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। আর তাই দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভসহ কিছু পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে হস্তক্ষেপ করার আইনি উপায় খতিয়ে দেখছে কোপেনহেগেন।
আরও পড়ুন: ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোর নিন্দা, দেশে দেশে মুসলিমদের বিক্ষোভ
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দূতাবাসের সামনে কোরআন পোড়ানো চরমপন্থী ও অত্যন্ত জঘণ্য কাজ। কয়েকজন বেপোরোয়া ব্যক্তি এমন কাজ করেছেন। আমি বলতে চাই, এ কয়জন ব্যক্তির কর্মকাণ্ড গোটা ড্যানিশ রাষ্ট্রের আচরণ বা মনোভাবের প্রতিনিধিত্ব করে না।
Advertisement
ড্যানিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সরকার এমন কিছু বিক্ষোভে হস্তক্ষেপ করতে চায়, যার মাধ্যমে অন্যান্য দেশ, সংস্কৃতি ও ধর্মের অবমাননা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সেসব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের চেষ্টা করছে, যা নিরাপত্তা উদ্বেগসহ ডেনমার্কের জন্য নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
মূলত প্রতিবাদ বা বিক্ষোভের নামে পবিত্র কোরআন বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর মতো কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছে ডেনমার্ক। নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক উদ্বেগ থেকেই এমন পদক্ষেপের কথা ভাবছে দেশটি।
আরও পড়ুন: সুইডেনে ফের কোরআন পোড়ানোর অনুমতি, বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসে হামলা
গত সপ্তাহে ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থি দু’জন ইসলাম বিদ্বেষী ব্যক্তি কোপেনহেগেনে ইরাকি দূতাবাসের বাইরে পবিত্র কোরআন অবমাননা করেন ও আগুন ধরিয়ে দেন। তাদের পাশেই মাটিতে পড়ে ছিল ইরাকের পতাকা। এ ঘটনার সপ্তাহখানেক আগেই ‘ড্যানিশ প্যাট্রিয়টস’ নামে উগ্র এ ডানপন্থি গোষ্ঠীর সদস্যরা ফেসবুক লাইভে এসে একই ধরনের কাজ করেছিল।
Advertisement
মুসলিম দেশগুলোতে বিক্ষোভ
চলতি মাসে ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের কর্মীরা দেশটির ইরাকি, মিশরীয় ও তুর্কি দূতাবাসের সামনে প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটিয়েছেন।
গত সোমবার (২৪ জুলাই) আল্ট্রা-ন্যাশনালিস্ট ডেনিশ প্যাট্রিয়টসের দুই সদস্য কোরআনের একটি কপিতে আঘাত করে ও একটি ইরাকি পতাকা পাশে রেখে কপিটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। আবার এ মাসের শুরুর দিকে সুইডেনে বসবাসকারী সালওয়ান মোমিকা (৩৭) নামে এক ইরাকি নাগরিক পবিত্র কোরাআন অবমাননার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠা পুড়িয়ে ফেলেন।
আরও পড়ুন: সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে নিন্দার ঝড়
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা মুসলিমবিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সৌদি আরব, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, ইরাক মরক্কো, কাতার, ইয়েমেন ও পাকিস্তান এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সুইডেন ও ডেনমার্ক বলেছে, তারা কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানাচ্ছে। কিন্তু কারও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে তারা বাধা দিতে পারে না। আর মুসলিমবিশ্বের দাবি, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে শুধু ইসলাম ধর্মের প্রতি এ ধননের ঘৃণা প্রকাশ করা মোটেই বৈধ ও যৌক্তিক কাজ হতে পারে না।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ