মেহেরপুরের মাঠজুড়ে সোনালী আঁশের সমারোহ। অথচ চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। বৈরী আবহাওয়ায় এ বছর সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানামা করেছে। এতে লম্বা হয়নি পাটগাছ। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্ষেতে হানা দিয়েছে পোকা।
Advertisement
পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কীটনাশক ছিটিয়েও মিলছে না প্রতিকার। ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা।
কৃষকরা বলছেন, অতিরিক্ত সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে পাট আবাদের খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। কিন্তু পোকার আক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। এ বছর বিঘা প্রতি পাঁচ-ছয় মণ পাট উৎপাদন হবে। যা গত বছরেরও অর্ধেক।
মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দীন বলেন, প্রচণ্ড রোদে পাট বাড়ছে না। পাটের জমিতে শুরু হয়েছে তিড়িং ও আঁচা পোকার আক্রমণ। এ পোকা পাটের পাতা খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। কীটনাশক ছিটিয়েও করে কাজ হচ্ছে না। এতে পাট মরেও যাচ্ছে।
Advertisement
একই গ্রামের আরেক কৃষক ফজলুল হক বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে একদিকে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে পোকার আক্রমণে পাট ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের ফলন অর্ধেক হবে। যে কারণে পাট চাষ করে আমরা লোকসানে আছি।
মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আরেক কৃষক মিলন হোসেন বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছি। প্রচণ্ড রোদে পাট যে পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়ার কথা তা হয়নি। পাশাপাশি পাটের জমিতে শুরু হয়েছে তিড়িং পোকা ও আঁচা পোকা আক্রমণ। এই পোকা পাটের পাতা খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। ফলে পাটের যে পরিমাণ ফলন হওয়ার কথা হবে না। তাই পাট কেটে অন্য ফসল চাষ করার চিন্তা করছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, বৈরী আবহাওয়া, সেমি লুপার (তিড়িং পোকা), সোয়া লুপার (আঁচার) আক্রমণ থেকে পাটক্ষেত বাঁচাতে কৃষকদের অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পাটক্ষেতে দড়ি দিয়ে কেরোসিন তেল প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাবেন কৃষকরা। কী পরিমাণ পাটক্ষেত ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর ২২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা আছে। যা থেকে তিন লাখ আট হাজার বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/এসজে/জেআইএম