শিক্ষা

মাধ্যমিকে দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা সেরা, উচ্চশিক্ষায়ও এগোতে চাই

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘সম্প্রতি ইউনিসেফ জানিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে। আমরাই এ অঞ্চলে সেরা। আমি মনে করি- চেষ্টা করলে আমরা এবার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবো।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে হবে। উচ্চশিক্ষা তথা বিশ্ববিদ্যালয়েও এ পরিবর্তন আনতে হবে।’

রোববার (৩০ জুলাই) মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে আমরা শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতার নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছি, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী অবকাঠামো উন্নয়ন করেছি, অ্যাকাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান করেছি, গবেষণাকে উৎসাহিত করতে বরাদ্দ বাড়িয়েছি, কেন্দ্রীয় গবেষণাগার ও উদ্ভাবন ল্যাব স্থাপন করেছি, লাইব্রেরির সুবিধা বৃদ্ধি এবং আবাসিক সুবিধাও বাড়িয়েছি।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘স্মার্ট শিক্ষা, স্মার্ট দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে। আমরা চাই, দেশের শিক্ষা এগিয়ে যাক। এজন্য আমরা নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করছি। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও দক্ষ করে তুলছি। গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছি। অবকাঠামোরও উন্নয়ন করছি। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করছি। এসব মিলিয়ে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত মান নিশ্চিত করা সম্ভব।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, আজকে কেউ না খেয়ে মারা যায় না। সবার পেটে খাবার আছে। সবার গায়ে ভালো কাপড় আছে। পায়ে অন্তত স্পঞ্জের হলেও এক জোড়া পরার মতো স্যান্ডেল বা জুতা আছে। যারা গৃহহীন-ভূমিহীন ছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা তাদের সারাদেশের আনাচে-কানাচ থেকে খুঁজে খুঁজে বের করেছেন, তাদের ঘর করে দিয়েছেন।’

‘চিকিৎসার দরকার হলে কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছেন, সেখানে যান। গ্রামে-গঞ্জে প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিউটি ক্লিনিক করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে।’

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সবার হাতে হাতে এখন মোবাইল। এটা দিয়ে শুধু কথা বলা নয়। এটা দিয়ে সব করা যায়। এক সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- নাগরিক সেবা সবার হাতে হাতে পৌঁছে দেবো। সেটা তিনি দিয়েছেন। সবার হাতে হাতে এখন মোবাইল পৌঁছে গেছে। ১৫ বছর আগেও এসবের কিছুই বাংলাদেশে ছিল না। এখন এগুলো এমনি এমনি হয়ে যায়নি। একজন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা; তিনি তার চিন্তা, শ্রম, সততা দিয়ে দেশটাকে এ জায়গায় নিয়ে এসেছেন। আমাদের এই যে যাত্রাপথ, এ পথে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। এ মাটি জঙ্গিবাদের নয়, এ মাটি মানবতার। এ মাটিকে সত্যিকার অর্থে সোনার বাংলায় রূপ দিতে চাই।’

Advertisement

সমাবর্তনে স্বাগত বক্তব্য দেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ায় তিনি সমাবর্তনে সশরীরে যোগ দিতে পারেননি। একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার বহুদিনের লালিত ইচ্ছা ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশন (সমাবর্তন) করবো। পরিস্থিতির কারণে তা করতে পারিনি। আমার ইচ্ছা ছিল মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এ সমাবর্তনে উপস্থিত থাকবো। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। যারা এ আয়োজনে শ্রম দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৭ আসনের সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত।

সমাবর্তনে প্রত্যেক অনুষদের ডিন গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রির ঘোষণা দেন এবং প্রতিটি ব্যাচ থেকে একজনকে সমাবর্তন ক্যাপ পরিয়ে দেন অতিথি ও অভিভাবকরা। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গ্র্যাজুয়েটরাও এতে অংশ নেন।

এএএইচ/জেডএইচ/