আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের কারণে পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে: মমতা

পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা এখনো ভালোভাবে শুরু হতে না হতেই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে এ রোগের প্রকোপ। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রশাসনিকভাবে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি।

Advertisement

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করেন, বাংলাদেশ থেকে এখানে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। এভাবে রোগ ছড়িয়ে পড়লে কী করা যায়? কাউকে তো ঢুকতে বারণ করতে পারি না। যাদের ডেঙ্গু ধরা পড়েছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। সে কারনেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা ও তার আশেপাশের এলাকায় বেশি ডেঙ্গুরোগী পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: কলকাতা প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

মমতা জানান, এপার বাংলায় ডেঙ্গু ঠেকাতে সীমান্ত এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে কোনো পর্যটক পশ্চিমবঙ্গে এলে সীমান্তেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম সব জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফেভার ক্লিনিক চালু রাখতে হবে সর্বক্ষণ।

কেউ জ্বর নিয়ে এলেই সঙ্গে সঙ্গে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। রোগীকে চিহ্নিত করে রেজিস্টারে নথিবদ্ধ করতে হবে ও প্রত্যেক হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বেশি করে সচেতনামূলক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গুতে ১১ বছরের বালকের মৃত্যু

রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, ৯ হাজার চিকিৎসককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ব্ল্যাড ব্যাংকগুলোকে রক্ত ও প্লেটলেটের যোগান ঠিক রাখতে যাতে কোনরকম ঘাটতি না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কর্মকর্তাদের বিশেষ দল ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া এলাকা ও হাসপাতালগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। জেলা প্রশাসক সব ব্যবস্থাপনার ওপরে নিয়মিত নজরদারি চালাবেন।

Advertisement

রাজ্য সরকার থেকে সিধান্ত নেওয়া হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকায় এক লাখ বিশেষ মশারি দেওয়া হবে। কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিম তার ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে পথে নেমে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, বিধানসভায় ডেঙ্গু নিয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে মমতা ব্যানার্জির মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, মমতার উচিত অবিলম্বে চার্টাড প্লেনে করে মশা মারার ক্যানিংয়ের শওকাত মোল্লা, ভাঙ্গরের আরাবুল ইসলাম, ফলতার জাহাঙ্গিদের নিয়ে ঢাকায় যাওয়া। আর এই প্রতিনিধি দল নিয়ে আলোচনায় বসুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে।

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তর এখনো স্পষ্ট করে না বললেও, বেসরকারি তথ্যানুযায়ী, রাজ্যে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। এরই মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। কিন্তু কোনো কোনো মহলের দাবি ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা সাত।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গুর নতুন ধরনে আক্রান্ত হলে অবস্থা হতে পারে গুরুতর

সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। এই জেলা প্রতিবছরই মশা বাহিত এ রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। এছাড়া কলকাতা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, দুর্গাপুর মহকুমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট ,বোলপুর মহকুমাসহ বেশকিছু জায়গা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রসাশন।

ডিডি/এসএএইচ