আগামী ২২ মার্চ প্রথমধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতোই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ততোই বাড়ছে। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার ও সমর্থকরা এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন। এরই মধ্যে বেশকিছু স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তাতে লোকজন হতাহতও হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। এ অবস্থায় সংঘাত, সহিংসতা ও প্রভাবমুক্ত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে। আগামী ২২ মার্চ ৭৩২ ইউপিতে প্রথম ধাপে ভোট হবে। তবে এরই মধ্যে ৬২ চেয়ারম্যান, ১৭৯ সাধারণ সদস্য ও ৫৪ সংরক্ষিত সদস্যপদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এতে ৩ হাজার ৩৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী, সাধারণ সদস্যপদে ২৫ হাজার ৮৪৭ ও সংরক্ষিত পদে ৭ হাজার ৫৭৫ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। তৃণমূলের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন ইউনিয়ন পরিষদে এই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। এ কারণে এবারের স্থানীয় নির্বাচন একটি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। দলীয় প্রার্থী ছাড়াও অনেক দলেরই রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। এটি নিয়েও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া থেকে শুরু করে প্রচারণা পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিধি ভঙ্গের হিড়িক চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী-সমর্থকদের নানা হুমকি ও ভয়ভীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক প্রার্থীকেই বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী বহু প্রার্থী। নির্বাচনে কমিশন অবশ্য বলছে সবকিছুই তাদের নজরে আছে। নিয়মভঙ্গ হলেই ব্যবস্থা। কিন্তু বাস্তবতা কি তা বলছে? নির্বাচনী সহিংসতায় সোমবার বগুড়ার শিবগঞ্জে একজন নিহত হয়েছেন। দেশের অন্যান্য স্থানে আহত হয়েছেন অন্তত ৬৫ জন। বুধবার বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জরে ভাসানচর ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় সাতজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো। এটি কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। তাছাড়া এ অবস্থা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। নির্বাচনী সহিংসতা আমাদের দেশে নতুন নয়। বিশেষ করে তৃণমূলের এই নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা বেশি থাকে। এ কারণে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ভূমিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। গোলযোগপূর্ণ কেন্দ্র গুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সাথে সাথেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে অন্যরা আর সাহস না পায় পুনরাবৃত্তি ঘটাতে। একটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় মূলত সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। এ জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার, সমর্থক, স্থানীয় প্রশাসন ও বিশেষ করে রাজনীতিক দলগুলোকেও যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সবাই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে-এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা। এইচআর/পিআর
Advertisement