রাজনীতি

ডুগডুগি বাজানো কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না: ফখরুল

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বিদায় করে যোগ্য-দক্ষ, দেশপ্রেমিক এবং মেধাবী মানুষদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, চলমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। যা এ ডুগডুগি বাজানো নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে হবে না।’

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘আইনজীবী সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা আইনজীবীরা অংশ নেন।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বিরোধীদলের ওপর অস্ত্র ব্যবহারের চক্রান্ত

Advertisement

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সামনে কোনো পথ খোলা নেই। ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে এ সরকার মিথ্যা মামলা দিয়েছে। রাজপথে নামলেই রক্ত ঝরাচ্ছে। অথচ কাটাছাটা সংবিধানের দোহাই দিয়ে তারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চাইছেন। শেখ হাসিনার অধীনে নাকি ভোট সুষ্ঠু হবে। আমি বারবার বলতে চাই না। হিরো আলম নামে যে ছেলেটা, তাকেও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে দিতে চায় না এ আওয়ামী লীগ সরকার। তাই বলবো, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের কোনো আস্থা নেই। তাদের (জনগণের) একটাই দাবি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার করা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে এনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।’

তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন- বিএনপি দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য সীমান্তে অস্ত্র জড়ো করছে। তিনি কোন সময়ে এটা বলছেন, যখন দেশের জনগণ এ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এক হয়ে রাজপথে নেমেছে, একটা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি এটা বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষমতাসীনদের অস্ত্র ব্যবহারের নতুন ষড়যন্ত্র, নতুন চক্রান্ত। তার এ বক্তব্যের পর যদি জনগণের ওপর অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকে, দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী ২৭ তারিখে ঢাকায় আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো। কোনো চক্রান্ত করে এ মহাসমাবেশ নস্যাৎ করা যাবে না। প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে দেবেন। অন্যথায় সব দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।’

আরও পড়ুন: ২০১৪-১৮ সালের নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করা উচিত

Advertisement

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এত বড় রাজনৈতিক সংকট এ দেশে এসেছে বলে আমার জানা নেই। বর্তমানে কথিত একটা সরকার ক্ষমতায় আছে। তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে, ভয়-ভীতি দেখিয়ে, রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসে করে ক্ষমতায় টিকে আছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসা যেকোনো গণতান্ত্রিক শক্তির জন্য কঠিন কাজ।’

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীকের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘এখানে একজন বলেছেন- সহিংস সশস্ত্র শক্তির বিরুদ্ধে নিরস্ত্র মানুষের লড়াই কঠিন কাজ। আমিও সেটা মনে করি। কিন্তু ইতিহাস বলে- জনতার শক্তির কাছে কোনো কিছুই টিকে থাকতে পারে না। আমরা জনগণের সেই শক্তিতে বিশ্বাস করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথেই হাঁটতে চাই।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

এএএইচ/কেএসআর/এমএস