দেশজুড়ে

দেবরের হামলায় আহত, ২০ দিন লড়াই করে হেরে গেলেন ভাবি

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দেবরের হামলায় জাহানারা খাতুন ওরফে সাজেদা (৫৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানো হয়।

Advertisement

সোমবার (২৪ জুলাই) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহানারা খাতুন মারা যান। গত ৫ জুলাই দেবরের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

জাহানারা খাতুন উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোমরভোগ খালপাড়া গ্রামের আকর শেখ ওরফে আকর মাঝির স্ত্রী। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত মরদেহ গ্রামে এসে পৌঁছায়নি। তবে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীরা ঘরবাড়ি ফেলে আত্মগোপন করেছেন।

নিহদের ছোট ছেলে তানজিদ হোসেন জানান, ঘটনার দিন সকালে তার মা জাহানারা খাতুন রান্না করছিলেন। এমন সময় চাচা আকমল হোসেন লোকজন নিয়ে তার বাবার (আকর মাঝির) দখলীয় মেহগনি বাগানের জমিতে ঘর তুলতে থাকেন। এ সময় সাজেদা তাদেরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আকমল হোসেন ও তার ছেলেরা জাহানারাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারতে থাকেন। তিনি ও তার বোন এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা করা হয়।

Advertisement

এক পর্যায়ে গ্রামবাসীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে মাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং সর্বশেষ ঢাকা মেডেকেল কলেজে স্থানন্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাল রাতে তিনি মারা যান। মায়ের হত্যাকারী চাচা ও তার ছেলেদের বিচার দাবি করেন তিনি।

এদিকে স্ত্রীর শোকে পাথর হয়ে গেছেন বৃদ্ধ আকর শেখ। স্ত্রীর মরদেহের অপেক্ষায় আছেন। তিনি জানান, তার বাবা কারছেদ আলী শেখ প্রায় ২৮ বছর আগে তাদের দুই ভাইয়ের নামে গ্রামের রাস্তা সংলগ্ন এই ১৯ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। ছোট ভাই আকমল তার জমি দখল বুঝে নেন। কিন্তু হঠাৎ করে সে (আকমল) ও তার ছেলেরা তার দখলীয় মেহগনি বাগানের মধ্যে ঘর তোলার চেষ্টা করেন। এ সময় জাহানারা দেবরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা সবাই মিলে তাকে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিট করে। তিনি স্ত্রীর হত্যাকারী ভাই ও ভাতিজাদের বিচার দাবি করেন।

অভিযুক্ত আকমল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে জানা যায়, বৃদ্ধার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর তার গোটা পরিবার আত্মগোপন করেছে।

স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বার সোবাহান আলী জানান, বৃদ্ধা জাহানারা খাতুনকে দেবর ও তার ছেলেরা মারপিট করেছিলেন।

Advertisement

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের এসআই আকরাম হোসেন জানান, বৃদ্ধার ওপর হামলার অভিযোগ পেয়ে তিনি গ্রামে এসেছিলেন। দখলদারদের বাঁশ খুঁটি সরিয়ে জমিটি দখলমুক্ত করেছিলেন। বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর গ্রামে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন। আল-মামুন সাগর/এফএ/এএসএম