মা হওয়ার পরে চাকরিজীবন থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। সন্তান ও সংসারকে এরপর সময় দিয়েছেন ১৩টি বছর। এবার ফের চাকরি করবেন বলে মনস্থির করেছেন তিনি। সে জন্যই নতুন করে সিভি বানিয়ে বিভিন্ন সংস্থায় পাঠিয়েছিলেন। সেখানে বাকি চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিশেষভাবে নজর কাড়ে তার সিভিটি।
Advertisement
কারণ ওই নারী সিভিতে উল্লেখ করেছেন, ১৩ বছর ধরে ‘হোমমেকার’ হিসেবে কাজ করেছেন। অর্থাৎ নিজের পেশাগত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি একই সারিতে বসিয়েছেন সংসার সামলানোর কথাও। তার এমন মানসিকতায় প্রশংসার বন্যা বয়ে গেছে ইন্টারনেটে।
আরও পড়ুন>> মণিপুরে দুই নারীকে নগ্ন হাঁটানোর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
বস্তুত, পেশাদারি জগতে বহুক্ষেত্রেই একটু হলেও নিচু নজরে দেখা হয় চাকরি থেকে কয়েক বছরের বিরতিকে। বিশেষ করে, নারীদের ক্ষেত্রে। কোথাও যেন ধরেই নেওয়া হয়, তিনি এতগুলো বছর ‘বসে ছিলেন’। কিছুই করেননি।
Advertisement
কিন্তু ওই নারীর ভাইরাল সিভি যেন সদর্পে ঘোষণা করছে, সংসার সামলানোটাও একটা কাজ, যা পেশাদারি দক্ষতা বা প্রতিভার সঙ্গে একই সারিতে বসে। এ জন্য লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
আরও পড়ুন>> আফগানিস্তানে বিউটি পার্লার বন্ধের প্রতিবাদে রাস্তায় নারীরা
সিভির তথ্যমতে, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত নিউইয়র্কের একটি সংস্থায় চাকরি করেছেন ওই নারী। এরপর ২০০৯ সালের আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত সংসারই সামলাচ্ছেন।
এই ১৩ বছর হোমমেকার হিসেবে ঠিক কী কী করেছেন, সেগুলোও সিভিতে উল্লেখ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী নারী। লিখেছেন- সংসারের সব কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা, সন্তানদের পড়াশোনা করানো, তাদের স্কুল প্রজেক্ট করানো, পরিবারের সদস্যদের দেখভাল করা, নিজের বাড়িঘর সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখার দক্ষতা রয়েছে তার।
Advertisement
সেই সিভির ছবি নিজের লিঙ্কডইন প্রোফাইলে শেয়ার করেন একটি কনটেন্ট মার্কেটিং সংস্থার কর্ণধার যুগাংশ চোকরা। তারপরেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সেটি। ঘর সামলানোর কাজ যে অন্য পাঁচটা পেশার মতোই চ্যালেঞ্জিং, তাতে একমত হয়ে কমেন্টের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।
যুগাংশ চোকরা লিখেছেন, ভারতে ২০ শতাংশেরও কম নারী পেশাদার হিসেবে কাজ করেন। এ দেশে গৃহস্থালী কাজে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণের আনুপাতিক পার্থক্য বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। এটি বাস্তবিক কাজ। সংসার চালাতে কাউকে যে পরিমাণ কাজ করতে হয়, তা আপনি হেলাফেলা করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন>> পাকিস্তানের ৮ হাজার মিটার উচ্চতার সব পর্বত আরোহনের রেকর্ড নায়লার
যুগাংশের মতে, এমন পরিস্থিতিতে নারীরা গৃহস্থালী কাজের অভিজ্ঞতাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে তা সিভির পেশাগত জায়গায় তুলে আনছেন, সেটি প্রশংসনীয়। এ বিষয়ে তার সঙ্গে একমত আরও অনেকে।
তেমনই একজন লিখেছেন, সিভিতে সেই (ঘরের কাজ) দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত করায় আমি তার আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করি। এটি অবশ্যই সিভিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। নারীদের গৃহস্থালী কাজ সমাজে স্বীকৃত নয় (সবসময় নয়, ব্যতিক্রমও রয়েছে)। এই কাজে অনেক দক্ষতা ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, দ্য ওয়ালকেএএ/