বাংলার আপেল খ্যাত দক্ষিণাঞ্চলের পেয়ারা রাজ্য ঝালকাঠির ভীমরুলী ভাসমান পেয়ারার হাটে ফ্রি ওয়াইফাই জোনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ ওয়াইফাই স্থাপন করা হয়। কৃষকদের পণ্য বিক্রি, আগত পর্যটকসহ সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা দিতে এ প্রকল্প চালু হয়েছিল। কিন্তু ওয়াইফাই বিল পরিশোধ না করায় সেটি দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে আছে। যার ফলে এ উদ্যোগ এখন আর কোনো কাজে আসছে না।
Advertisement
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৭ জুন ভীমরুলী ভাসমান পেয়ারা বাজার এলাকাটিকে ফ্রি ওয়াইফাই জোন হিসেবে উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এম জিয়াউল আলম। এর আগে ঝালকাঠির এই ভাসমান পেয়ারা বাজার দেখতে এসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ফ্রি ওয়াইফাই জোন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওয়াইফাই জোন চালুর পর এক বছর এর বিল পরিশোধ করা হয়। এরপর আর বিল পরিশোধ না করায় প্রায় দুই বছর ধরে এ সার্ভিস বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাসমান বাজারে ফ্রি ওয়াইফাই!
ফ্রি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভাসমান পেয়ারার হাটে আগত কৃষকরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাজার দর জানাসহ পেয়ারা চাষের প্রযুক্তির ব্যবহার ও বিপণনের বিষয়ে তথ্য জানতে এ ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে আগত পর্যটকরা এই অঞ্চলের পেয়ারা চাষ এবং এই ভাসমান বাজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করাই ছিল ওয়াইফাই স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য।
Advertisement
কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পেয়ারা চাষি ভবেন হালদার বলেন, মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার ওয়াইফাই স্থাপন করলেও বিল পরিশোধ না করায় অকেজো হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে বজ্রপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওয়াইফাই মেশিন সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিয়ে যায়। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে প্রকল্পটি ভেস্তে গেছে।
আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমে ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর ভাসমান পেয়ারা বাজার
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রোগ্রামার ফিরোজ আলম জেহাদি বলেন, ইনফো সরকার ৩ প্রকল্পের আওতায় ‘ভেন্ডর’ নামে একটি কোম্পানি ওয়াইফাই সরবরাহ ও স্থাপন করে। ২০২০ সালের ১৭ জুন ভীমরুলী ভাসমান পেয়ারা বাজার সংলগ্ন একটি ভবনে এটি স্থাপন করা হয়। ওই কোম্পানি চুক্তি অনুযায়ী এক বছরের বিল দেয়।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে প্রকল্প শেষ হলে উপজেলা থেকে বিল পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা পরিষদ নাকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আওতায় বিল পরিশোধ হবে এ নিয়ে টানাটানিতে ওয়াইফাই সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বজ্রপাতে ওয়াইফাই মেশিনটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংস্কারের জন্য নেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত বিল পরিশোধের দায়িত্ব কেউ না নেওয়ায় এটিকে আর সচল করা সম্ভব হয়নি।
Advertisement
আরও পড়ুন: ভিমরুলির ভাসমান বাজারে যেভাবে যাবেন
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার বলেন, আমি যোগদানের আগেই ওয়াইফাই সার্ভিস চালু হয়েছে। আমাকে কেউ উপজেলা থেকে বিল পরিশোধের বিষয়ে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই সেভাবে উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। আর আমাদের তো ওভাবে ফান্ডও থাকে না। তবুও যদি কোনো কাগজ বা রেজুলেশন কেউ দেখাতে পারতো তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিতাম।
এমআরআর/এমএস