পশ্চিম তীরে ফের ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন তিন ফিলিস্তিনি নাগরিক। সেখানে ইসরায়েলি সৈন্যদের হাতে ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যার ঘটনা নতুন কিছু নয়। রোজই কোনো না কোনো ফিলিস্তিনিকে প্রাণ হারাতে হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাবলুস শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে নিহতদের পরিচয় এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
Advertisement
অপরদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, নিহত ব্যক্তিরা সশস্ত্র সন্ত্রাসী ছিল। নাবলুস শহরে একটি গাড়ি থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। সে সময় তাদের প্রতিহত করতে ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায়।
আরও পড়ুন: জেনিন ছাড়ছে ইসরায়েলি বাহিনী
ওই অঞ্চলের বাণিজ্যিক রাজধানী নাবলুস এখন ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে অভিযানের নামে ফিলিস্তিনিদের আটক করা হচ্ছে এবং নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, একটি ইহুদি বসতির কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর উপর ফিলিস্তিনিদের কথিত হামলার পরেই অতর্কিত হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। অপরদিকে ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, তারা ফিলিস্তিনিদের বহনকারী গাড়িটি থেকে তিনটি এ১৬ রাইফেল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে।
Advertisement
অধিকৃত পশ্চিম তীরে সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। বার বার সেখানে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। গত মাসের শুরুর দিকে পশ্চিম তীরে জেনিন শরণার্থী শিবিরে ড্রোন হামলার পাশাপাশি বড় ধরনের অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ অভিযান গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা ও অনুপ্রবেশের ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই অভিযানে অন্তত ৯ ফিলিস্তিনি নিহত ও শতাধিক আহত হয়। সে সময় ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে যে, তারা ওই এলাকার সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনে। অন্তত দেড় শতাধিক সাঁজোয়া যানে করে প্রায় ১০ হাজার ইসরায়েলি সেনা শিবিরটিকে ঘিরে রাখে। তাদের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ছিল।
আরও পড়ুন: ১২ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি, পাল্টা হামলায় ইসরায়েলি সেনা নিহত
দুই দশক আগের দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পর জেনিন শহরে এ ধরনের বড় অভিযানের ঘটনা আর ঘটেনি। আধা বর্গকিলোমিটারের কম আয়তনের এ শিবিরে ১৮ হাজারের মতো শরণার্থী বাস করে। অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আনুমানিক ৩,০০০ ফিলিস্তিনি জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়েছে।
Advertisement
জেনিনের স্কুল ও অন্যান্য আশ্রয়কেন্দ্রে বাস্তুচ্যুতদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চলতি বছর পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর এবং গাজাসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম তীরে।
টিটিএন