দেশজুড়ে

সোহাগপুর গণহত্যা দিবস আজ

ঐতিহাসিক সোহাগপুর গণহত্যা দিবস আজ (২৫ জুলাই)। ১৯৭১ সালের এই দিনে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাঁকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে সংঘটিত হয়েছিল নৃশংস গণহত্যা।

Advertisement

এদিন পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনী ভারত সীমান্তঘেঁষা এ গ্রাম ঘিরে ফেলে। এরপরই শুরু করে নির্মম হত্যাযজ্ঞ। ১৮৭ জন পুরুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে তারা। সেদিন রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছিল সোহাগপুর গ্রামে।

স্ত্রীর চোখের সামনে স্বামীকে, সন্তানের চোখের সামনে বাবাকে ও ফসলের মাঠে গিয়ে গুলি করে মানুষ হত্যা করে পাক-হানাদাররা। সারা গ্রাম পুরুষ শূন্য হওয়ায় লাশ দাফনে বিপদে পড়েন তারা। দাফনের কাপড় না পেয়ে অনেক কষ্ট করে পরনের ছেঁড়া কাপড় ও মশারি দিয়ে পেঁচিয়ে এক কবরে একাধিক লাশ দাফন করেন তারা। জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে কেউবা আবার লাশ ফেলে চলে যান অন্যত্র। সব পুরুষকে হত্যা করায় এই গ্রামের নামকরণ করা হয় ‘সোহাগপুর বিধবাপল্লী’।

আরও পড়ুন: মাদারীপুরের সেনদিয়া গণহত্যা দিবস আজ

Advertisement

এই পল্লীতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ৫৬ জন বিধবা বেঁচে ছিলেন। বর্তমানে ২৩ জন বিধবা বেঁচে আছেন। এর মধ্যে ১৪ জন বিধবাকে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনজন বীরাঙ্গনা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। এখন জীবিত আছেন বীরাঙ্গনা ১১ জনসহ ২৩ বিধবা নারী। বাকি বিধবারা বীরাঙ্গনার স্বীকৃতির প্রাপ্তির দাবি জানান।

বীরাঙ্গনারা বলেন, স্বাধীনতার পরে কেউ আমাদের খোঁজ খবর নেয়নি। আমাদের এমপি বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রচেষ্টায় আমরা এখন বীরাঙ্গনা ভাতা ২০ হাজার, ট্রাস্ট ব্যাংকের দেওয়া ২ হাজার ও বিধবা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা করে পাচ্ছি। সরকারিভাবে দেওয়া পাকাবাড়ি, রাস্তাঘাট আমরা পেয়েছি। এ জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খ্রিস্টফার হিমেল রিছিল বলেন, দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ‘সৌর জায়া’ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, বীরাঙ্গনাদের সংবর্ধনা প্রদান, নগদ অর্থ বিতরণ ও উন্নতমানের খাবার পরিবেশন।

ইমরান হাসান রাব্বী/জেএস/জেআইএম

Advertisement