দেশজুড়ে

কুমিল্লায় চাষ হচ্ছে ‘চারাপিতা’ মরিচ, ১ কেজির দাম ২৮ লাখ

বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ বলে পরিচিত ‘চারাপিতা’। দেখতে গোলাকার প্রতিকেজি চারাপিতা মরিচের দাম ২৬ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ২৮ লাখেরও বেশি। বর্তমানে দামি এ মরিচ চাষ হচ্ছে কুমিল্লায়।

Advertisement

শখের বশে সৌখিন কৃষক আহমেদ জামিল সেলিম কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়ায় তার বাগান বাড়িতে এ মরিচ চাষ করছেন। তিনটি গাছে ধরেছে কয়েকশ মরিচ।

দেখতে গোলাকার এ মরিচ কাঁচা অবস্থায় সবুজ রঙের হলেও পাকলে হলুদ হয়ে যায়। অত্যন্ত সুগন্ধি ও ব্যতিক্রম সাইজের হওয়ায় তা দেখতে স্থানীয়রা তার বাড়িতে ভিড় করছেন।

বাংলাদেশের আবহাওয়া চারাপিতা চাষে উপযুক্ত কি না, সে বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

Advertisement

রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে সরেজমিন গেলে কৃষক আহমেদ জামিল সেলিম জাগো নিউজের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি এ মরিচ চাষে তার সফলতার গল্প তুলে ধরেন।

তিনি জানান, ২০১৭ সালে ইন্টারনেটে তিনি এ মরিচের সন্ধান পান। পরে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। একে একে তিনবার বীজ বপন করে ব্যর্থ হন। পরে সেই বীজ পুনরায় আমেরিকায় তার এক আত্মীয়ের কাছে পাঠিয়ে বপন করলে একটি চারা গজায়। সেই গাছ থেকে ৫০টি বীজ সংগ্রহ করে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশে এনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে বীজ বপন করা হয়। এর মধ্যে মাত্র পাঁচটি বীজে চারা গজিয়েছে।

পরে বস্তায় মাটি ভরে তিনটি কুমিল্লার বাসায় এবং দুটি ঢাকার বনশ্রীর বাসায় টবে রোপণ করেন আহমেদ জামিল। কুমিল্লার ওই তিনটি গাছে কয়েকশ ফলন এলেও ঢাকার দুটিতে এখনো আসেনি।

তিন বছর পর্যন্ত এ গাছ থেকে ফলন পাওয়া যাবে বলে জানান কৃষক আহমেদ জামিল। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

এর আগে ব্ল্যাক টমেটো, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঝাল মরিচসহ বিভিন্ন ফসল নিয়ে কাজ করেছেন সৌখিন এ কৃষক।

রোদ কোনো সমস্যা না হলেও বৃষ্টির পানি পড়লে চারাপিতা মরিচ গাছ মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সচরাচর এ বীজ দেশে পাওয়া যায় না। বাণিজ্যিক চাষও তেমন হয় না, তবে পেরুতে চাষ হয়। এটি মসলাজাতীয় মরিচ। যা জাফরানের চেয়েও দামি।

কৃষক আহমেদ জামিল সেলিমের দাবি, চারাপিতা মরিচ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মরিচ। এককেজি মরিচের দাম ২৬ হাজার ডলার। সুগন্ধি এ মরিচ মূলত ধনীরা ব্যবহার করেন। আরব দেশের রাজা-বাদশাহরা তাদের খাবারে এ মরিচ ব্যবহার করতেন। মক্কার অনেক দামি হোটেলেও এটি ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে আবাদ হওয়া এ জাতের মরিচে ঝাল কম।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, এটি দামি মরিচ। বাংলাদেশের জলবায়ু এটি চাষে কতটুকু সফল, সেটা নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। সাধারণত এটি বেলে মাটিতে হয়।

এসআর/জিকেএস