ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে না বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যদি বিপদচিহ্ন থাকে তবে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। রোববার (২৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু বিষয়ক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
Advertisement
বিপদচিহ্ন উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলে, পেটে ব্যাথা, অত্যাধিক পানি পিপাসা থাকা, ঘনঘন বমি বা বমি বন্ধ না হওয়া, রক্ত বমি বা কালো পায়খানা হওয়া। অনেক রোগীর দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত হয়, কারও কারও ছয় ঘণ্টার বেশি সময় প্রস্রাব না হলে তাকে হাসপাতালে যেতে হবে।
এছাড়া প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ও অত্যাধিক শারীরিক দুর্বলতা অনুভব, শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে গেলে হাসপাতালে যেতে হবে। এছাড়া গর্ভবতী ও শিশু, ডায়াবেটিস ও দুরারোগ্য কোনো রোগে আক্রান্ত থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিপদচিহ্ন ছাড়া বাকিরা বাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিতে পারবে। বিশেষ করে যেসব ডেঙ্গু রোগী মুখে পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে পারে, প্রতি ছয় ঘণ্টায় প্রস্রাব হয় এমন রোগী বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিতে পারবে। তবে বাড়িতে থাকলেও তাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ ময় তাদের পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত লবণযুক্ত তরল যেমন: সেলাইন, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি পান করতে হবে।
Advertisement
ওষুধের ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ডেঙ্গুতে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ খাওয়া যাবে না। পূর্ণ বয়স্কদের জন্য দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০০ মিলিগ্রামের ৬টি ট্যাবলেট এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়া হবে। জ্বর কমাতে কুসুম গরম পানিতে সরাসরি শরীর মুছে ফেলতে হবে। এতে ভালো প্রতিকার পাওয়া যায়।
রাজধানীসহ সরাদেশে ছড়িয়েছে ডেঙ্গু। তবে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সর্বাধিক। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে রোগী সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর জানায়, ২২ জুলাই সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ২৪২ জন। এর মধ্যে রাজধানীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক হাজার ২৩৯ জন। অর্থাৎ ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে রোগী বেশি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে বেশি রোগী হাসপাতালে এসেছে। এলাকা ভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী, মুগদা, কদমতলি, জুরাইন, ধানমন্ডি এবং বাসাবো এলকায় আক্রান্তের হার বেশি। উত্তর সিটি করপোরেশনের উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, তেজগাঁও এবং বাড্ডা এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি।
Advertisement
ডেঙ্গু সংক্রমণ রোধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাসা বাড়িতে জমানো পানি তিনদিনের বেশি রাখা যাবে না। দিনে-রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানাতে হবে। মশার কামড় থেকে বাঁচতে ছোট-বড় সবাই সর্বোচ্চ শরীর ডেকে রাখে এমন কাপড় পড়তে হবে। বর্তমানে রোগীর জ্বর থাকলে ডেঙ্গু পরীক্ষা এনএস-১ করাতে হবে। চিকিৎসা গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬২৬৩-থেকে পরামর্শ নেওযা যাবে।
এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস