আন্তর্জাতিক

মণিপুরের মতো পশ্চিমবঙ্গেও নারী নির্যাতন হচ্ছে

ভারতের মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্মম অত্যাচারের ঘটনায় ভারতজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। শুক্রবার (২১ জুলাই) কলকাতার তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ দিবস মঞ্চ থেকে মণিপুরের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও। তার অভিযোগ, ‘বিজেপি বেটি বাঁচাও’ স্লোগান দিয়ে ‘বেটিদের জ্বালাচ্ছে’।

Advertisement

এর কয়েক ঘণ্টার পরেই দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির সঙ্গে মণিপুরের তুলনা করলেন হুগলির বিজেপি এমপি অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।

আরও পড়ুন>> মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় উত্তাল ভারত

এদিন নারী নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, মণিপুরের যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি খুবই দুঃখজনক। তারাও আমাদের দেশের সন্তান।

Advertisement

এরপর পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিজেপি সংসদ সদস্য বলেন, এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনের নামে সহিংসতার, ভোট লুটের, খুনের, সন্ত্রাসের ও নারীদের ওপর অত্যাচারের নির্বাচন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছোট ঘটনা। পুলিশ আমাদের অভিযোগ নেয় না। মা-বোনদের বাঁচাতে আমরা কোথায় যাবো?

লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় পাঁচলায় বিজেপি কর্মীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা রাজ্যে নারীদের ওপর নির্যাতন চলছে। আমরা কেন্দ্রকে বলি। কেন্দ্র তদন্ত করে, রাজ্যের পক্ষে থেকে কোনো সহযোগিতা করা হয় না। আমরা কোথায় যাবো?

আরও পড়ুন>> আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে ছুড়ে ফেলবে নারীরা: মমতা

তিনি আরও বলেন, মমতা ব্যানার্জী নারী মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও ১০-১২ বছর ধরে বারবার নারীদের ওপর অত্যাচার ঘটছে পশ্চিমবঙ্গে। কালিয়াগঞ্জে এক দলিত নারীকে অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে। তার কোনো বিচার হলো না।

Advertisement

লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভিডিও ভাইরাল হলে তবেই কি আমরা এ ধরনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলবো? সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী চুপ কেন? বাকি রাজ্যে গিয়ে এরা কান্নাকাটি করেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে মুখ খোলেন না। অধীর চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করুন, তার এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস কেমন অত্যাচার করছে।

আরও পড়ুন>> সরকার কী উল্টাবে, নিজেরাই কাঁপছে: বিজেপিকে মমতার খোঁচা

এরপর হুগলি জেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গণনার দিন নারীদের অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার এলাকার জেলা পরিষদ প্রার্থীকে ভোট গণনার দিন চুলের মুঠি ধরে বাইরে ফেলে দিলো। কিছু করতে পারলাম না। শুধু তাকিয়ে ছিলাম। পুলিশকে গিয়ে বললাম। পুলিশ বললো, আপনি এখান থেকে চলে যান।

হুগলির বিজেপির এমপি আরও বলেন, মণিপুর যেমন ভারতের মধ্যে, তেমন পশ্চিমবঙ্গও ভারতের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের ঘটনা নিয়ে গতকাল কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের আইনি ব্যবস্থা কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের রাজ্যের মেয়েরা কোথায় যাবে? এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতার বলি হয়েছে ৫৭ জন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। দু-একটা ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন>> বিরোধীদের ২৬ দলের বিপরীতে মোদীর ৩৮ দলীয় জোট

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের জনগণ ভেবেছিল নারী মুখ্যমন্ত্রী হলে রাজ্যের নারীরা বেশি সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু নারী নির্যাতনেই পশ্চিমবঙ্গ সবচেয়ে এগিয়ে।

ডিডি/কেএএ/