খেলাধুলা

বিশ্বকাপ দলে ফেরা নিয়ে কী ভাবছেন সৌম্য?

তার উত্থান চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চোখের সামনে। হাথুরু কোচ হয়ে আসার পরই ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ঠিক আগে আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে সৌম্য সরকারের।

Advertisement

বিশ্বকাপে দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং করলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে তারপর পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে দারুণ খেলেন সৌম্য। অল্প সময়ের ভেতর আলো ছড়ায় তার ব্যাট।

তিন-তিনবার ম্যাচসেরার পুরস্কার পান ঝোড়ো আর ম্যাচ জেতানো ব্যাটিং দিয়ে। পাকিস্তানের সাথে ১১০ বলে ১৩ বাউন্ডারি আর ৬ ছক্কায় ১২৭ রানের উত্তাল ইনিংস খেলে দলকে জেতান।

এরপর ২০১৬ সালের জুলাইতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরপর ২ খেলায় যথাক্রমে ৭৯ বলে অপরাজিত ৮৮ আর ৭৫ বলে ৯০ রানের ম্যাচ উইনিং নক উপহার দিয়ে রীতিমত হিরো বনে যান সৌম্য। অল্প সময়ের ভেতর ওপেনিংয়ে বড় আস্থার প্রতীক ভাবা হচ্ছিল সৌম্যকে। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে আলো ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ২০২১ সালের ফেব্রয়ারি-মার্চ থেকে প্রথমে টেস্ট এবং পরে ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েন। আর গত বছর ৬ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার এডিলেডে পাকিস্তানের সাথে টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর আর জাতীয় দলেই সুযোগ পাননি। তবে শোনা যাচ্ছে, হেড কোচ হাথুরুসিংহে তাকে বিশ্বকাপ দলে চাচ্ছেন। দ্বিতীয়বার কোচের দায়িত্ব পেয়েই সৌম্যের ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছেন হাথুরুসিংহে। কাজ শুরুর পরপরই নির্বাচকদের সৌম্যর অবস্থা খুঁটিয়ে দেখার তাগিদ দিয়ে বসেন। নির্বাচকরা প্রাথমিকভাবে জানান, সৌম্যর ফর্ম মোটেই ভালো না। জাতীয় দলে শেষদিকে তিন ফরম্যাটেই খারাপ খেলে জায়গা হারিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না।

Advertisement

ঢাকা মোহামেডানের হয়ে গত বছর আর এবার প্রিমিয়ার লিগেও কথা বলেনি সৌম্যর ব্যাট। তবে এবার মোহামেডানের হয়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে সুপার লিগের শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। সেরা ছন্দ ও ফর্মে না থাকলেও সৌম্যর চিন্তা মাথা থেকে যায়নি কোচ হাথুরুর। টপ অর্ডারে না, এ বাঁহাতি ব্যাটারকে মিডল অর্ডারে খেলানো যায় কিনা , সে চিন্তাই চলছে। আর তাই একঝাঁক তরুণের সঙ্গে সৌম্যকে ইমার্জিং এশিয়া কাপে নেওয়া হয়েছে। আশার কথা, ইমার্জিং কাপে মোটামুটি রান করেছেন সৌম্য।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম খেলায় ৪৬ বলে ৪২ আর আফগানিস্তানের সাথে ঠিক আগের খেলায় ৪২ বলে ৪৮ রানের একজোড়া কার্যকর ইনিংস উপহার দিয়েছেন সৌম্য। দুই খেলায়ই ওপেনার হিসেবে নয়, সৌম্য খেলেছেন ছয় নম্বরে।

ব্যাটিং পজিশন দেখে মনে হচ্ছে সৌম্যকে নিয়ে মিডলঅর্ডারে চিন্তাভাবনা চলছে। এই জায়গায় সৌম্য একা নন, কয়েকজন বিকল্প পারফরমারকে দিয়ে ‘ট্রাই’ করছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। আফিফ হোসেন ধ্রুব আফগানিস্তানের সাথে ওয়ানডে সিরিজে খেলেছেন। এর বাইরে শেখ মাহাদি, সৌম্য সরকার আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথাও শোনা যাচ্ছে।

সৌম্য কি পারবেন, বাকিদের হারিয়ে দলে জায়গা করে নিতে? তিনি নিজে কী ভাবছেন? দলে ফেরা নিয়ে কতটা আশাবাদী এ বাঁহাতি ব্যাটার কাম জেন্টাল মিডিয়াম পেসার? কলম্বোয় টিম হোটেলে বসে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন সৌম্য। তবে মুঠোফোন আলাপে এসব নিয়ে খুব বেশি এগোতে চাইলেন না সৌম্য। পরিষ্কার করে তেমন কিছু বলতে চাননি।

Advertisement

জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘অবশ্যই জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখি।’

তাহলে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে ফেরা নিয়ে কী ভাবছেন? এবার একদমই চুপ হয়ে যায় মুখ। তেমন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। শুধু বলেছেন, ‘আমি এখন ওসব নিয়ে তেমন ভাবছি না।’ এরপর বলেন, ‘এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ খেলার টার্গেট নিয়েই যে এগোচ্ছি, তা নয়। আমাকে ইমার্জিং কাপে নেওয়া হয়েছে, চেষ্টা করছি ভালো খেলতে, রান করতে। বলতে পারেন, এখন ইমার্জিং কাপে রান করাই আমার প্রধান কাজ। তারপর দলে ফেরা না ফেরা, সেটা তো টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের ব্যাপার। তারাই ভালো বলতে পারবেন।’

এআরবি/এমএমআর/এএসএম