দেশজুড়ে

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে কমবে দুর্ভোগ, বাঁচবে সময়

কুমিল্লার লাকসাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে দুর্ভোগ কমবে যাত্রীদের। দীর্ঘসময় ধরে ক্রসিংয়ে আর দাঁড়িতে থাকতে হবে না। একইসঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ৩২১ কিলোমিটার রেলপথ আজ থেকে ডাবল লাইনে উন্নীত হলো।

Advertisement

বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম এ রেলপথে ২৩ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে এ পথ দিয়ে দৈনিক ৭২ জোড়া ট্রেন চলাচল করতে পারবে। একইসঙ্গে মালবাহী ট্রেন চলাচলের সংখ্যাও বাড়বে মনে করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন।

কুমিল্লা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথ সিঙ্গেল লাইনের হওয়ায় এতদিন ক্রসিংয়ে পড়ে বিলম্বিত হতো ট্রেনযাত্রা। তাছাড়া কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকতে দেখা গেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

Advertisement

লাকসাম থেকে নিয়মিত ট্রেনযাত্রী নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চাকরির কারণে প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াত করি। কুমিল্লা-আখাউড়া অংশে ক্রসিংয়ের কারণে প্রায় সময় ট্রেন বিলম্বিত হতো। আশা করছি এখন থেকে সঠিক সময়ে কুমিল্লায় পৌঁছাতে পারবো।’

আরও পড়ুন: আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন রেলপথ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

সাইফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধনের ফলে রেলপথে নতুন অধ্যায় সূচনা হলো। এখন ক্রসিংয়ের ঝামেলা ছাড়াই কম সময়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম পৌঁছানো সম্ভব হবে।’

লাকসাম রেলওয়ে জংশনের সহকারী মাস্টার ইকবাল হোসেন বলেন, আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন হওয়ায় রেলওয়েতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো। এখন থেকে নিয়ম মেনেই ট্রেন চলবে।

Advertisement

এ উপলক্ষে কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন তাতে অংশ নেন।

রেলওয়ে সূত্রমতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ১২৪ কিলোমিটার ব্রিটিশ আমলে ডাবল লাইনে উন্নীত হয়। লাকসাম থেকে চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইন হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে। পরের বছরে ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গী থেকে ভৈরববাজার পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ডাবল লাইন চালু হয়। লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করতে ২০১৪ সালে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)।

২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয় নির্মাণকাজ। ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে লাকসাম পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশ ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ডাবল লাইন নির্মাণ এবং বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়নে এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর এক হাজার ২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থায়ন করেছে সরকার।

জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/জেআইএম