একটি ভবন, তার মধ্যেই আস্ত এক শহরের। যে শহরের মানুষের বাস, বাজার, স্কুল, হাসপাতাল, গির্জা সবই এই ভবনে। ১৪ তলা এই বিল্ডিংয়ের অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য আলাস্কায় অবস্থিত। একে বেগিচ টাওয়ারও বলা হয়।
Advertisement
বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার শহর রয়েছে। প্রায় সব শহর দেখতে একই রকম। বাড়ি-ঘর, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ধর্মীয় উপাসনালয় এসব কিছুই থাকে একটি শহরে। তবে এমন শহরের কথা আগে শুনেছেন কি? যে শহর অবস্থিত একটি বিল্ডিংয়ের মধ্যেই। যেখানে আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক সব ধরনের সুবিধাই আছে। সেটাও আবার ওই বিল্ডিংয়ের মধ্যেই।
আরও পড়ুন: মশার তৈরি কেক-স্যুপ তাদের প্রিয় খাবার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার হুইটিয়ার শহরটি বড় অদ্ভুদ। এই শহরের সমগ্র জনসংখ্যা একটি একক ভবনে বসবাস করেন। ভবনের ভেতরে রয়েছে নাগরিকদের সবধরনের সুযোগ সুবিধা এবং পরিষেবা। স্কুল থেকে থানা, মেয়রের কার্যালয় সবই রয়েছে এই একটি ভবনে। যাতে সেখান বসবাসকারী ব্যক্তিরা কোনো সমস্যায় পড়লে সেখানে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন। আশ্চর্যের বিষয় হল, এই একটি ভবনেই পুরো শহর বসবাস করে। এখানে লন্ড্রি এবং জেনারেল স্টোরের সুবিধাও রয়েছে। সেখানকার মালিক এবং কর্মচারী সবাই এই ভবনে।
Advertisement
ভবন বা টাওয়ার হওয়ার কারণে একে বলা হয় ভার্টিক্যাল টাউন। এই ভবনে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বসবাস করে। তবে অতীতে এটি কোনো শহর ছিল না। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় এই টাওয়ারটি ছিল একটি সেনা ব্যারাক। সেই যুদ্ধের অনেক রহস্য এখনো এই ভবনে তালাবদ্ধ এমনটা দাবি করেন অনেকে। ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং সেনাবাহিনী ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই জনগণ এটিকে তাদের বাসভবনে পরিণত করে।
তবে পাঠকের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, কেন শহরের সব মানুষ এই এক ভবনেই বাস করেন। আসলে আলাস্কার আবহাওয়া সারা বছরই খারাপ থাকে। কঠিন আবহাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে এই বেগিচ টাওয়ারে মানুষ বসবাস করে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বাইরে কোথাও থাকা খুবই কঠিন।
হুইটিয়ারের আবহাওয়ার অবস্থা এতোই খারাপ থেকে যে শীতকালে এর তাপমাত্রা নেমে আসে -২১ ºসি। ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার বেগে বাতাস ও ৬ মিটার তুষারপাত হয়। এ কারণে এই ভবন ছেড়ে লোকজন অন্য কোথাও যান না। এ কারণেই এখানে প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসপত্র তৈরি করা হয়েছে।
৫০ জন শিশুর জন্য, ভবনটির ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে একটি স্কুল তৈরি করা হয়েছে। করিডোর এবং লিফটের মাধ্যমে পুরো বিল্ডিংকে সংযুক্ত করা হয়েছে। ভবনের ভেতরেই আছে হাসপাতাল।
Advertisement
কেএসকে/জেআইএম