দেশজুড়ে

মৃত শাশুড়ির জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পুত্রবধূর বাধা

সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মৃত শাশুড়ির দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে বাধা দিয়েছেন পুত্রবধূ। খবর পেয়ে পুত্রবধূকে হেফাজতে নিয়ে জানাজা শেষে তার শাশুড়ির দাফন সম্পন্ন করেছে পুলিশ।

Advertisement

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, এক নারী খোঁড়া কবরে বসে ও শুয়ে আছেন। গ্রামবাসী তাকে সেখান থেকে ওঠানোর চেষ্টা করছেন। কবরের আশপাশে পুলিশ সদস্যরাও আছেন। সেখানে জড়ো হওয়া গ্রামবাসী বলছেন, আপন শাশুড়ির সঙ্গে এমন কাজ কি কেউ করে। তখন একজন তাকে বলছেন, আপনি কাগজে না পাইলে কী করবেন। আপনি কী কবরে শুয়ে জায়গা (জমি) নেবেন। আপনি না পেলে কেমনে নেবেন। সবই এক জায়গা দিয়ে নেবেন। এ সময় কেউ কেউ ক্ষোভে তাকে চাপা দেওয়ার কথা বলছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার (১৭ জুলাই) বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ শাহনাজ ওই গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহিমের স্ত্রী। প্রয়াত আনোয়ারা বেগম (৮০) ওই গ্রামের মৃত মোবারক আলী খানের স্ত্রী।

Advertisement

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাহনাজের প্রতিবেশীরা জানান, মৃত মোবারক ও আনোয়ারা দম্পতির পাঁচ কন্যা এবং এক ছেলে আছেন। ছেলে আব্দুর রহিম সৌদি প্রবাসী। জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে শাশুড়ি ও ননদদের সঙ্গে শাহনাজের বিরোধ চলছিল। শাহনাজের শাশুড়ি মারা যাওয়ার আগে দাফনের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। সেখানে দাফনের জন্য তার কবরও খোঁড়া হয়। ওই জমি নিজেদের দাবি করে শাহনাজ তার শ্বশুরের কবরের পাশে শাশুড়িকে দাফন করতে বলেন।

প্রতিবেশীরা আরও জানান, কিন্তু তার ননদরা মায়ের অসিয়ত করা স্থানে দাফন করবেন বলে জানান। এ নিয়ে বিরোধের এক পর্যায়ে শাহনাজ তার শাশুড়ির জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন। এ খবর পেয়ে পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কান্তি মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শাহনাজ বেগম (৪৫) নামে এক নারী তার শাশুড়িকে কবর দিতে বাধা দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

ওসি আরও বলেন, ওই গৃহবধূর কর্মকাণ্ডে তার গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পরে শাহনাজের মুচলেকা নিয়ে তার ভাইয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শাওন খান/এসজে/এএসএম