এ বছর দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় এখন দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন সময়। প্রাকৃতিকভাবে ডিম ছেড়েছে মা মাছেরা। ডিম থেকে মলা, ঢেলা, পুঁটি, কই, চিংড়ি, টেংরা, পাবদা, শিং, মাগুর, ভেদা ও চান্দু মাছের রেণু পোনার জন্ম হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে বোয়াল ও আইড় মাছের পোনা।
Advertisement
তবে এই পোনাগুলো ধরতে হাওরে তৎপর হয়ে উঠেছে এক শ্রেণির জেলেরা। তারা নিষিদ্ধ বেড় জাল, মশারি ও কারেন্ট জাল নিয়ে সারাদিন কাওয়া দিঘির শালকাটুয়া, মাঝের বান্দ ও উলাউলি বিল এলাকায় অবাধে মাছ ধরছে। প্রতিদিন প্রায় ১০টি বড় আকারের বেড় জাল দিয়ে মাছ শিকার চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও রয়েছে, চায়নিজ ম্যাজিক জাল ও কিরণমালা প্লাস্টিক পটের অভিনব মাছের ফাঁদ। যা রাতের বেলা পানির নিচে ডুবিয়ে রাখা হয়। সকাল হলে ফাঁদে আটকা মাছগুলো তুলে আনেন অসাধু জেলেরা। এতে বিনাশ হচ্ছে মাছের বংশ। মাছের সঙ্গে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ, সাপ, কুচিয়া, ভোদড়, কাঁকড়া, কচ্ছপসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণি। মৎস্য বিভাগ বলছে, এরইমধ্যে হাওর এলাকায় নিষিদ্ধ জাল দিয়ে পোনা মাছ না ধরার জন্য প্রচারণা চালানোসহ জেলেদের সচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার চেষ্টা চলছে।
সোমবার (১৭ জুলাই) কাওয়া দিঘি হাওরে গিয়ে দেখা গেছে হাওরের গভীর এলাকায় ৪-৫টি বড় নৌকা নিয়ে জেলেরা বেড় জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন। এ সময় কথা হয় হাওর পারের রক্তা গ্রামের উকিল উদ্দিনের সঙ্গে।
Advertisement
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সবেমাত্র মাছের পোনা জন্মেছে। এই রেণু পোনা শিকার বন্ধ না করা হলে মাছের আকাল দেখা দেবে।
হাওর পারের খালদারপার গ্রামের রাসেল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, চায়নিজ ম্যাজিক জাল লম্বা করে গভীর জলে পাতানো হয়। এই জালে ছোট বড় সব ধরনের মাছ আটক হয়। মাছসহ কাঁকড়া, কচ্ছপ, সাপ, কুচিয়া, ব্যাঙ ও ভোদড়সহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী ওই জালে উঠে আসে। এতে জলজ প্রাণীও বিলুপ্তির পথে।
রাজনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মীর আলতাফ হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, কাউয়া দিঘি হাওরে পোনা মাছ ধরার বিষয়টি জেনেছি। আমরা এর আগে হাওর পারের জেলেদের সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করেছি। তাদের বলা হয়েছে অবৈধ জাল দ্বারা পোনামাছ নিধন না করতে। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জেলা মৎস্য অফিসার মুহম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি জেনেছি। অবৈধ জাল দিয়ে পোনা মাছ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমি কয়েকদিন কর্মস্থলে ছিলাম না। এ ব্যাপরে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Advertisement
এফএ/এএসএম