জাতীয়

নৌকার আরাফাতের জয়

ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। নৌকা প্রতীকে তিনি ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট। এ হিসাবে আরাফাত ২৩ হাজার ২০৭ ভোটের ব্যবধানে হিরো আলমকে পরাজিত করেছেন।

Advertisement

সোমবার (১৭ জুলাই) রাত ৯টার পর ১২৪টি কেন্দ্রের এ চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান। নির্বাচনে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অন্য ছয় প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমান ১ হাজার ৩২৮ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছেন। এছাড়া জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী কাজী মো. রাশিদুল হাসান ৯২৩ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী মো. আকতার হোসেন ৬৪ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ৪৩ ভোট, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী শেখ হাবিবুর রহমান ২০২ ভোট এবং ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঞাঁ ৫২ ভোট পেয়েছেন। 

আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে: ইসি আলমগীর

Advertisement

ঢাকা-১৭ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০ জন। ১২৪টি কেন্দ্রের ৬০৫টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা। সব কেন্দ্রে ভোট হয় ব্যালট পেপারে।

এদিন বিকেল ৫টার পর থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফল আসতে থাকে। প্রথমে ৫০টি এবং দ্বিতীয় ধাপে ১০৮টি, তৃতীয় ধাপে ১২০টি এবং এরপর ১২৪টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা ধরেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এর আগে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। ধারণা ছিল, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু দুপুর গড়ালেও বিভিন্ন কেন্দ্র ছিল অনেকটাই ফাঁকা। এত কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও হতাশা ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন: এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন করবো না: হিরো আলম

Advertisement

ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে হামলার শিকার হন হিরো আলম

তবে প্রার্থীদের কেউ কেউ জানান, স্বল্প মেয়াদের জন্য এ উপ-নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের আগ্রহ কম। তাই অনেকে ভোটকেন্দ্রে আসেননি। অন্যদিকে বিএনপি এ উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সামনে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী ছিল না।

ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা-১৭ আসনে ঠিক কত শতাংশ ভোট পড়েছে সে তথ্য আমরা পাইনি। তবে খুবই কম ভোট পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হতে পারে, সর্বোচ্চ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে।

আরও পড়ুন: ভোটকেন্দ্রে হিরো আলমকে ধাওয়া

ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন আটজন। তাদের মধ্যে ভোটের প্রচারণায় মোহাম্মদ আলী আরাফাত, হিরো আলম ও সিকদার আনিসুর রহমানকে সবচেয়ে বেশি তৎপর থাকতে দেখা যায়।

এদিকে উপ-নির্বাচনে নির্বাচনী পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম জানিয়েছেন, এ সরকারের অধীনে তিনি আর কোনো নির্বাচন করবেন না। তিনি বলেন, ভোটের এরকম পরিবেশ হলে, প্রার্থীদের ওপর হামলা হলে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো দরকার নেই।

আরও পড়ুন: ভোটকেন্দ্রে কিছু হয়নি, তবে ঘটনাটি দুঃখজনক

সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হামলার শিকার হন হিরো আলম। এরপর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে সাংবাদিকদের ভোট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন তিনি। এ হামলার ঘটনায় দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের একজন নিজেকে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা বলে দাবি করেছেন।

হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ হামলার নিন্দা জানান।

আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা আরাফাতের

গত ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ায় ঢাকা-১৭ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এমএমএ/এমওএস/এমকেআর/এএসএম