স্বাস্থ্য

ডেঙ্গুর পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই, তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ

দেশে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু সংক্রমণের হার বাড়ছে। কিন্তু ডেঙ্গুরোগীদের শতভাগ বা পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহ করতে পারছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অনেক বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য অধিদপ্তরের হাতে নেই। ফলে ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত যে তথ্য অধিদপ্তর দিচ্ছে সেটিকে দেশে ডেঙ্গুর প্রকৃত বাস্তব চিত্র বলা যাবে না। তবে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলছে অধিদপ্তর।

Advertisement

সোমবার (১৭ জুলাই) দেশের চলমান ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের লাইন ডিরেক্টর ডা. অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণার সময় আসেনি

ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষার সব তথ্য আমাদের কাছে নেই। কোভিডের সময় তথ্য সংরক্ষণ আমাদের জন্য পসিবল ছিল, কারণ সেটির ডিজিটাল সিস্টেম ছিল। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালেই ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রোভাইড করা হয়েছিল। যে কারণে কোভিডের প্রায় শতভাগ তথ্য আমরা সরবরাহ করতে পারতাম। এ গোটা প্রক্রিয়াটির জন্য অনেক জনবল প্রয়োজন।

Advertisement

নি বলেন, ডেঙ্গুরোগীদের যথাসাধ্য তথ্য সরবরাহের আমরা চেষ্টা করছি। পরবর্তী সময়ে অটোমেশন সিস্টেম চালু হলে অটোমেটিক আমরা তথ্যগুলো পেয়ে যাবো। তখন আর তথ্য সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না।

ডা. শাহাদাৎ হোসেন আরও বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সঙ্গে আমারদের যোগাযোগ ছিল না। কোভিডের সময় তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া শুরু করি। আরও ৩০টি হাসপাতাল আগামী কদিনের মধ্যে ডেঙ্গুরোগীর তথ্য দেবে। এ তথ্যগুলো দিতে এরই মধ্যে আমরা সেসব হাসপাতালকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। ক্রমান্বয়ে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতাল যেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে শতভাগ তথ্য দেয়, সে ধরনের উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গু নিয়ে ৫ বার্তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের

তিনি বলেন, ডেঙ্গুবিষয়ক যে তথ্যগুলো আমরা নিয়মিত দিই, এর বাইরেও বেসরকারি কিছু তথ্য আমাদের কাছে আসে, কিন্তু সেগুলো ইনকমপ্লিট হওয়ায় আমরা সেসব তথ্য দিতে পারি না। আমাদের কিন্তু শুধু কতজন রোগী ভর্তি আছে বা আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলো পেলেই হয় না, রোগীর নাম, বাবার নামসহ পূর্ণাঙ্গ ঠিকানাও নিতে হয়। এমনকি সেগুলো আবার সিটি করপোরেশনেও পাঠাতে হয়। আশা করি, ভবিষ্যতে এ জায়গাটি নিয়ে আমরা আরও ইমপ্রুভ করবো।

Advertisement

এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। প্রতিটি হাসপাতালে আমাদের ডেঙ্গু কর্নার আছে, ইনফরমেশন ডেস্ক আছে। ডেঙ্গু চিকিৎসায় যারা কাজ করবে, তাদের আমরা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। প্রতিটি হাসপাতালেই পর্যাপ্ত শয্যা প্রস্তুত আছে।

আরও পড়ুন: সজাগ না হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে

তিনি বলেন, শুধু ডিএনসিসি ডেডিকেটেড ডেঙ্গু হাসপাতালেই ৮০০টি শয্যা রেখেছি। এছাড়া মুগদা হাসপাতালে ৬০০টি, ঢাকা মেডিকেলে ১২০টি, সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ১৯৫টি, শিশু হাসপাতালে ৪৪টি, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১২০টি, কুর্মিটোলায় ২৫০টি, কুয়েত মৈত্রীতে ৭২টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, ঢাকা সিটির বাইরে দেশের প্রতিটি উপজেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত ডেঙ্গুর পৃথক কর্নার এবং শয্যা প্রস্তুত আছে। ফলে ডেঙ্গু সংক্রমণের হার আরও বাড়লেও চিকিৎসাসেবায় আমাদের প্রস্তুতির কোনো কমতি নেই।

এএএম/এমকেআর/এএসএম