স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান- গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে আজ (১৭ জুলাই)। ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন: চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে আজ (১৭ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এ সময় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নবান্ন উৎসব উদযাপন পরিষদ, আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধ সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ভাষা ও সাহিত্য কল্যাণ পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচিকাঁচার মেল, উদীচী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদ, চলচ্চিত্র ও নাট্য নির্মাতা, পত্রিকার সম্পাদকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।
Advertisement
আরও পড়ুন: শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ও আশফাকুর রহমানের মৃত্যুতে উদীচীর শোক
এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পরেও বুলবুল মহলানবীশ তার লড়াই থামিয়ে দেননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী বুলবুল মহলানবীশ একাধারে অভিনয়শিল্পী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, রম্য রচয়িতা ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিল্পী বুলবুল মহলানবীশের প্রতি সর্বজনের শ্রদ্ধা আজ
তিনি আরও বলেন, এছাড়া একজন সংগঠক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য তিনি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিটি কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। একটি সাংস্কৃতিক জাগরণের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ গড়ার জন্য তিনি লড়ে গেছেন। আজকে তাকে আমরা হারিয়েছি। কিন্তু তিনি তার কাজের মাধ্যমে আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
Advertisement
এর আগে সকাল ৯টার দিকে বুলবুল মহলানবীশের মরদেহ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেওয়া হয়। সেখানে ধর্মীয় আনুষ্ঠনিকতা শেষে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে রাখা হয়। এরপর সবুজবাগ শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ১৪ জুলাই ভোরে বুলবুল মহলানবীশ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ধরনের অসুখে ভুগছিলেন।
বুলবুল মহলানবীশ একাধারে কবি ও লেখক, সংগীতশিল্পী, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান তিনি উপস্থাপনা করতেন।
বুলবুল মহলানবীশ নজরুল সংগীতশিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, সাধরণ সম্পাদক রবীন্দ্র একাডেমি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচিকাঁচার মেলা, উদীচী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বুলবুল মহলানবীশ সংগীতচর্চা ও লেখালেখির জন্য বিভিন্ন সম্মাননা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন।
এমএমএফ/এএসএম