আন্তর্জাতিক

অনুমতি পেয়েও পবিত্র তোরাহ-বাইবেল পোড়ালেন না মুসলিম যুবক

পবিত্র কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদস্বরূপ শুক্রবার (১৪ জুলাই) সুইডেন পুলিশের কাছে ইহুদিদের পবিত্র গ্রন্থ তোরাহ ও খ্রিষ্টান ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেল পোড়ানোর অনুমতি চান আহমাদ আলুশ (৩২) নামের এক ব্যক্তি। সুইডিশ পুলিশ ওই আবেদনকারীকেও ধর্মগ্রন্থ দুটি পোড়ানোর অনুমতি দেয়।

Advertisement

শনিবার (১৫ জুলাই) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে তোরাহ ও বাইবেল পোড়ানোর কথা ছিল আলুশের। কিন্তু তার পরিবর্তে একটি কোরআন হাতে নিয়ে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে গিয়ে হাজির হন তিনি।

আলুশ বলেন, আমি কখনোই কোনো ধর্মগ্রন্থ পোড়াবো না। ইসলাম আমাকে এ শিক্ষা দেয় না। আর সত্যি বলতে, তোরাহ ও বাইবেল পোড়ানোর কেনো ইচ্ছাই আমার ছিল না। আমি শুধু আমার ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদস্বরূপ এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছি।

তোরাহ ও বাইবেল পোড়ানোর অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়, কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদেই শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তোরাহ ও বাইবেল পোড়ানো হবে। বিষয়টিকে আবেদনকারী তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে দাবি করেন।

Advertisement

শুক্রবার, তোরাহ ও বাইবেল পোড়ানোর অনুমতি দেওয়ায় ইসরায়েলসহ বিভিন্ন ইহুদি সংগঠন নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তীব্র ক্ষোভও প্রকাশ করেছিল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু টুইটারে লেখেন, ইহুদি জনগণের পবিত্র গ্রন্থের অবমাননার অনুমতি দেওয়ার এ সিদ্ধন্তকে অত্যন্ত গুরুতরভাবে নিয়েছে ইসরায়েল।

কর্মসূচিটির অনুমতি দেওয়ায় ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ এক বিবৃতিতে বলেন, আমি পবিত্র কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এখন ইহুদিদের চিরন্তন গ্রন্থের জন্যও একই পরিণতি অপেক্ষা করছে। আমি নিঃসংকোচে সুইডেনে পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানোর এমন অনুমতি দেওয়ার নিন্দা জানাই।

অন্যদিকে, ওয়ার্ল্ড জায়োনিস্ট অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান ইয়াকভ হ্যাগোয়েল এক বিবৃতিতে বলেন, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়, বরং ইহুদি বিদ্বেষ। ইউরোপীয় ইহুদি কংগ্রেসও এর নিন্দা জানিয়ে বলে, কোনো সভ্য সমাজে উসকানিমূলক, বর্ণবাদী, ইহুদি বিদ্বেষী কাজের স্থান থাকতে পারে না।

গত ২৮ জুন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি মসজিদের সামনে সালওয়ান মোমিকা নামে এক ইরাকি অভিবাসী পবিত্র কোরআনের একটি কপি পুড়িয়ে দেন। সেসময় সুইডেন পুলিশ ওই ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেয়। সুইডেনের একটি আদালত সালওয়ানকে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দেয়।

Advertisement

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন এমন ঘটনা ঘটায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। বিশ্বব্যাপী সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এ ঘটনার প্রতিবাদে তেহরানে নিযুক্ত সুইডিশ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে। এছাড়া নিন্দা ও প্রতিবাদ চলছে পুরো আরব বিশ্বসহ অন্য মুসলিম দেশগুলোতে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে                                                  

এসএএইচ