২৪ বছরে পদার্পণ করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। শনিবার (১৫ জুলাই) নানা আয়োজনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির সূচনা করা হয়।
Advertisement
পরে সকাল ১০টা ৩০মিনিটে শেকৃবির প্রশাসনিক ভবনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য) অধ্যাপক অলোক কুমার পালের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রশাসনিক ভবনে এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে শেকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদের সঞ্চালনায় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন শেকৃবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক অলোক কুমার পাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন, শেকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম মাসুদুর রহমান মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক অলোক কুমার পাল উপস্থিত সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান। তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. শাদাত উল্লাহ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
Advertisement
আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতা কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয় এবং কেক কেটে আনন্দ উদযাপন করা হয়।
জানা গেছে, ২০০১ সালের এ দিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হলেও কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর রয়েছে দীর্ঘ ৮৫ বছরের অবদান। উপমহাদেশের প্রথম কৃষি শিক্ষার ভিত্তি স্থাপিত হয় এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট নামে এর যাত্রা শুরু হয়। কালের পরিক্রমায় উপমহাদেশের ভূ-রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এর নামও পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে এটি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ আমলে ১৯৩৮ সালের ১১ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১০ জন মুসলিম ও ১০ জন হিন্দু শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। চার বছর মেয়াদি কোর্স সম্পন্ন করে এ ২০ শিক্ষার্থী উপমহাদেশের প্রথম কৃষিবিদ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এরপর দেশভাগ হয়ে দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত হলে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় পূর্ব পাকিস্তান অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট।
Advertisement
১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের নাম রাখা হয় বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট। দেশ তথা উপমহাদেশের মানুষকে দুর্ভিক্ষের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হাজারো কৃষিবিদ প্রস্তুত করে আধুনিক কৃষি শিক্ষা। গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষি খাত শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছে এ প্রতিষ্ঠান।
এমআইএইচএস/জেআইএম