অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। চাঁদে পাড়ি দিলো ভারতের একটি চন্দ্রযান। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেয় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩। কাউন্টডাউন শুরু হয়েছিল আগে থেকেই। শুক্রবার শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিংপ্যাড থেকে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হয়। এই মুহূর্তের জন্য আগে থেকেই প্রহর গুনছিলেন ভারতবাসী।
Advertisement
এর আগে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের চন্দ্রযান সফলভাবে চাঁদে নেমেছে। চন্দ্রযান-৩য়ের এই অভিযান সফল হলে ভারত হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ যাদের পাঠানো মহাকাশযান চাঁদের বুকে নামবে। শুক্রবার চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী শ্রী জিতেন্দ্র সিং। আগেই চন্দ্রযানের সাফল্য কামনায় তিরুপতি মন্দিরে পূজা দিয়েছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন>৬৩ বছরে প্রথম নারী প্রধান পেলো অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক
চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম বিক্রম এবং রোভারের নাম প্রজ্ঞান। ৪০ দিন পর আগামী ২৩ থেকে ২৪ আগস্টের মধ্যে চাঁদের বুকে নামতে পারে এই চন্দ্রযান।
Advertisement
ইসরোর এই চন্দ্রযানের কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট, যা চন্দ্রযানটিকে শক্তি জোগাবে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ঠেলে দেবে। এলভিএম-৩ হলো একটি ত্রিস্তরীয় উৎক্ষেপণ যান। এর আগে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ এবং চন্দ্রযাত্রায় এই এলভিএম-৩ ব্যবহৃত হয়েছে। একে ভারতীয় রকেটের ‘বাহুবলী’ বলা হয়। এর মধ্যে দুটি স্তরে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে তরল জ্বালানি রয়েছে। কঠিন জ্বালানি ১২৭ সেকেন্ড ধরে জ্বলে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে তরল জ্বালানি, যা ২০৩ সেকেন্ড ধরে রকেটটি চালনা করে।
আরও পড়ুন>ভারতে বন্যায় নিহত শতাধিক, যমুনার পানিতে হাবুডুবু দিল্লি
এর আগে ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-কে চাঁদের পিঠে নামাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল ইসরোর চন্দ্রযান-২। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে এই ভারতীয় সংস্থা। তবে আগের অভিযানে পাঠানো অরবিটারটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।
এবারের অভিযানে ইসরো আর কোনো অরবিটার চাঁদের কক্ষপথে পাঠাবে না বলে জানানো হয়েছে। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারের সাহায্য নেবে এবার চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার এবং এর ভেতরে থাকা রোভার। চাঁদের মাটিতে নেমে দুসপ্তাহ ইসরোর গবেষণা চলবে। এতে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং নাসার সাহায্যও নেওয়া হবে। এই অভিযান নিয়ে বেশ আশাবাদী ভারত।
Advertisement
টিটিএন/এএসএম