রুবেল মিয়া নাহিদ
Advertisement
পাঠাগার একটি জাতির বিকাশ ও উন্নতির মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। অনেকেরই বইপড়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও টাকার অভাবে বই কিনতে পারেন না। পাঠাগারের মাধ্যমে বিনা মূল্য রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী বই সংগ্রহ করা যায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় শিক্ষামূলক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মানবিক পাঠশালা’র উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘মানবিক পাঠশালা উন্মুক্ত পাঠাগার’। যা চকরিয়া শহরের প্রথম উন্মুক্ত পাঠাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানবিক পাঠশালা উন্মুক্ত পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়। শহরে অতীতে কোনো উন্মুক্ত পাঠাগার না থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পাঠাগারটি। শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, সাহিত্যকে পর্যালোচনার মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-ভাবনা, বাস্তবতা ও কল্পনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত করাই এ পাঠাগারের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে মানবিক পাঠশালা
Advertisement
মানবিক পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা ইরানুল ইসলাম বলেন, ‘মানবিক পাঠশালা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে শিক্ষামূলক ইতিবাচক কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের এবং যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে একটি আদর্শিক, স্মার্ট সিটিজেন ও বই পড়তে উৎসাহিত করতে আমাদের এ পাঠাগার। পাঠাগারে এসে সবাই জ্ঞান আহরণ করবে, অন্যদের মাঝে তা ছড়িয়ে দেবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
পাঠাগারে বই পড়তে আসা তরুণদের মতে, বর্তমানে সবাই স্যোশাল মিডিয়া নির্ভর এবং বিভিন্ন গেমসের প্রতি আসক্ত। তবে পাঠাগারে এসে নিয়মিত বইপড়ার মাধ্যমে দেশ ও বিদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে জানার আগ্রহ বাড়ছে, তা নিয়ে তারাও খুব উচ্ছ্বসিত।
স্থানীয় রুস্তম শাহরিয়ার বলেন, ‘শিক্ষার্থী-যুবকদের পাশাপাশি আমাদের মতো সিনিয়র সিটিজেনরা অবসর সময়ে এখানে এসে বইপড়ার সুযোগ পাচ্ছি, যা অত্যন্ত আনন্দের।’
আরও পড়ুন: তরুণদের গবেষণামুখী করে গড়ে তুলছে বিকে স্কুল অব রিসার্চ
Advertisement
সংগঠনের উপদেষ্টা মারুফ আদনান বলেন, ‘এমন পাঠাগারের মাধ্যমে একটি আলোকিত সমাজ গঠনে আমরা বদ্ধপরিকর। সবাইকে বই পড়তে উৎসাহিত করতে প্রতিটি এলাকায় উন্মুক্ত পাঠাগার স্থাপন করা খুবই জরুরি।’
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, ‘এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ। যদি দরকার হয়, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পাঠাগারকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’
বর্তমানে মানবিক পাঠশালা উন্মুক্ত পাঠাগারে ৩ শতাধিক বই রয়েছে। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। সপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা রাখায় পাঠাগারে অর্ধশতাধিক পাঠক বই পড়তে আসেন এবং তাদের পছন্দের বই বাসায় নিয়ে যান।
লেখক: ফিচার লেখক।
এসইউ/জিকেএস