দেশে বাড়ছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। এতে মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। আবার অনেক শিশুরাও এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।
Advertisement
ডেঙ্গু জ্বর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে একটি সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণ, যা মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শহরাঞ্চলে ডেঙ্গু জ্বর বেশি দেখা যায় তার কারণ হলো অনেক মানুষের আগমন, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট ও বাড়ি নির্মাণ।
আরও পড়ুন: এডিস মশা কখন কামড়ায়, চিনবেন কীভাবে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে মানুষ ও মশার চলমান ভ্রমণের ফলে শহরে ডেঙ্গু জ্বর ৩০ গুণ বেড়েছে। ১৯৬০-২০২২ সালের মধ্যে শহরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
Advertisement
শিশুদের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো সাধারণত সংক্রমণের ৩-১৪ দিন পরে শুরু হয়। উচ্চ মাত্রার জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশি, জয়েন্টের ব্যথা ও ত্বকের ফুসকুড়ি ডেঙ্গু জ্বরের অন্যতম লক্ষণ।
ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো সাধারণত ২-৭দিন স্থায়ী হয়। বেশিরভাগ মানুষই এক সপ্তাহ পরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে গুরুতর ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আবার মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি হয়, যেখানে প্লাজমা লিক, তরল জমা, শ্বাসকষ্ট, মারাত্মক রক্তপাত বা অঙ্গ দুর্বলতার কারণে রক্তচাপ বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: গরমে শিশুকে যে কাজ থেকে বিরত রাখবেন
Advertisement
ফলে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হতে পারে, অনেক সময় এর থেকে মৃত্যুও হতে পারে। এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক কিছু লক্ষণ যেমন- তীব্র পেটে ব্যথা, ক্রমাগত বমি, শ্বাসকষ্ট ও অস্থিরতা দেখলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে রোগীকে।
সাধারণ ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে এক শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে মারাত্মক হয়, অন্যদিকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর ২.৫ শতাংশের ক্ষেত্রে মারাত্মক হয়। যদি ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের চিকিৎসা না করা হয় তাহলে মৃত্যুহার ২০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করণীয়
শিশুরা যেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত না হয় তার প্রতিরোধে আসলে আমাদের করণীয় দুটি উপায় আছে। একটি হলো টিকা দেওয়া ও অন্যটি বাহকের বিস্তার রোধে।
আরও পড়ুন: প্লাটিলেট কমে যায় কেন, এর লক্ষণ কী?
টিকা বা ভ্যাকসিন বহির্বিশ্বে চলে এসেছে। আমাদের দেশে এখনো সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি। এজন্য মশার বিস্তার রোধে প্রথম গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
শিশুকে সব সময় মশারির মধ্যে ঘুম পাড়াতে হবে। এ সময় শিশুদের ফুলহাতা জামা কাপড় পরিয়ে রাখাটাই ভালো। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের মশা কামড় নিরোধক ক্রিম পাওয়া যায়, যা ব্যবহার করতে হবে।
সর্বোপরি বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন, ফুলের টব, টিন, বোতল, নারকেলের খোলস ইত্যাদিতে যেন পানি না জমতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
ফ্রিজ বা এসির পানি যাতে না জমে সেটার ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয় ধাপের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নির্ভর করে সরকারি পর্যায়ে বা সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থার উপর।
জেএমএস/জেআইএম