মিয়ানমারে চলমান সংঘাত মোকাবিলায় আঞ্চলিক ঐক্য ও রাজনৈতিক সমাধানের ডাক দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ান। বুধবার (১২ জুলাই) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে এ আহ্বান জানানো হয়।
Advertisement
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) জাকার্তায় আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হয়। দুদিনের এ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য ছিল, মিয়ানমারে রক্তক্ষয়ী সংকট মোকাবিলা ও দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনের উপায় খুঁজে বের করা।
মিয়ানমারে ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। সেই থেকে মিয়ানমার সংকট ততই ঘনিভূত হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংকট সমাধানে দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে আসিয়ানের একটি শান্তিচুক্তি হলেও, দুই বছরে তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি জোটটি।
২০২১ সালের এপ্রিলে সই হওয়া ওই শান্তিচুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে দুই বছর ধরে মিয়ানমারকে বারবার সংঘাত বন্ধ ও বিরোধীদের সঙ্গে সংলাপ শুরুর আহ্বান জানিয়ে আসছে আসিয়ান। তবে তাতে কোনো কানেই দেয়নি জান্তা সরকার। ফলে জোটের সক্ষমতা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
Advertisement
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার জাকার্তায় জড়ো হন আসিয়ানের ১০ সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার (১২ জুলাই) আসিয়ানের সভাপতি দেশ ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেন, সম্মেলনে পাঁচ-দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমারে শান্তি ফেরানোর জন্য এটিই একমাত্র কূটনৈতিক প্রক্রিয়া।
তিনি আরও বলেন, সদস্য দেশগুলো একটি বিষয়ে ঐক্যের উপরে জোর দিয়েছেন। সহিংসতা বন্ধ না হলে সংলাপ শুরু ও ত্রাণ সহায়তা বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ কখনোই তৈরি হবে না বলে একমত হয়েছে সবাই।
‘মিয়ানমার জান্তা সরকারের সঙ্গে যে শান্তিচুক্তি হয়েছে, তার বাস্তবায়নই আসিয়ানের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। ঐক্যকে বিশ্বাসযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে না পারলে কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না।’
২০২১ সাল থেকেই মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় আসিয়ান। গত মাসে থাইল্যান্ডের উদ্যোগে ব্যাংককে আয়োজিত এক বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সদস্যরা অংশ নিলেও অনুপস্থিত থাকে আসিয়ানের অন্য দেশগুলো।
Advertisement
পরে থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রামুদিনাই বলেন, মিয়ানমার সংকটের কারণে সীমান্ত, বাণিজ্য ও শরণার্থী প্রভৃতি সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে থাইল্যান্ড। বুধবার (১২ জুলাই) এক বিবৃতিতে থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী কারাবন্দি অং সান সু চির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। সম্প্রতি ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাদের মধ্যে এক ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে। সু চি সুস্থ আছেন। এর বেশি কিছু জানাননি ডন প্রামুদিনাই।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ