আন্তর্জাতিক

নিরপেক্ষ অবস্থান ছেড়ে সুইডেন-ফিনল্যান্ড কেন ন্যাটোতে?

প্রতিবেশী দেশ ফিনল্যান্ডের পথ ধরে এবার সুইডেনও যোগ দিতে চলেছে ন্যাটোতে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সুইডেনের ব্যাপারে তার দেশের আপত্তি তুলে নেওয়ার পর এই সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার পথ খুলে গেলো সুইডেনের জন্য।

Advertisement

ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে এই পশ্চিমা জোটে যোগ দেয় গত এপ্রিলে, তাদের নিয়ে ন্যাটো জোটের সদস্য দেশের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১।

নরডিক অঞ্চলের এই দুটি দেশ বহু দশক ধরে তাদের সামরিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করলো, তারপর এই দুটি দেশ তাদের অবস্থান বদলায়। ইউক্রেন যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপীয় মহাদেশে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে মনে করা হয়।

সুইডেনের ম্যাগডালেনা এন্ডারসন ও ফিনল্যান্ডের সান্না মারিন ২০২২ সালে তাদের দেশকে ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চেষ্টা শুরু করেন।

Advertisement

উত্তর ইউরোপে একটা দীর্ঘ সময় ধরে যে ধরনের স্থিতিশীলতা ছিল, ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর তা ভেঙে গেছে। এর ফলে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের মতো দেশ এখন মনে করছে তাদের দেশের নিরাপত্তা এখন বেশ নাজুক হয়ে পড়েছে।

সাবেক ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার স্টাব বলেছেন, গত বছর যখনই রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনে আক্রমণ চালালো, তখনই আসলে ঠিক হয়ে গেলো যে ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে ঢুকবে।

সোভিয়েতরা ১৯৩৯ সালের শেষভাগে ফিনল্যান্ড আক্রমণ করেছিল। তিন মাস ধরে ফিনিশ সেনাবাহিনী রুশদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ যুদ্ধ চালায়। যদিও তাদের সৈন্য সংখ্যা ছিল সোভিয়েতদের চেয়ে অনেক কম। ১৯৪০ সালের মার্চ পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের বাহিনী টিকে ছিল। কিন্তু ফিনল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কারেলিয়া দখল করে নেয় সোভিয়েত রাশিয়া।

ফিনল্যান্ড হয়তো রাশিয়ার দখলে যায়নি, কিন্তু নিজ দেশের ১০ শতাংশ সীমানা তারা হারিয়েছিল।

Advertisement

ইউনিভার্সিটি অব হেলসিংকির রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইরো সারকা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ দেখে মনে হচ্ছিল সেই পুরোনো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

ফিনল্যান্ডের মানুষ তখন রাশিয়ার সঙ্গে নিজেদের এক হাজার ৩৪০ কিলোমিটার সীমানার দিকে তাকাচ্ছিল আর ভাবছিল, এটা কি আমাদের সঙ্গেও ঘটতে পারে?

রাশিয়ার আক্রমণ ফিনল্যান্ড ১৯৪০ সালের মার্চ পর্যন্ত ঠেকিয়ে রেখেছিল, কিন্তু তাদের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ রাশিয়ার দখলে চলে যায়।

এদিকে সুইডেনের সামরিক দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে পড়ে ২০১৩ সালে যখন রাশিয়ার বোমারু বিমান স্টকহোমের ওপর আক্রমণের একটি মহড়া পরিচালনা করছিল। তখন সুইডেনকে ন্যাটোর সাহায্য চাইতে হয় রুশদের তাড়াতে।

আরও পড়ুন>কোরআন অবমাননা: জাতিসংঘের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা

২০১৪ সালে সুইডেনের মানুষ একটি খবর শুনে স্তম্ভিত হয়ে যায়। স্টকহোম দ্বীপপুঞ্জের কাছেই অগভীর পানিতে নাকি রাশিয়ার সাবমেরিন ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সুইডেনে ২০১৮ সালে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনীর একটি প্রচারপত্র পাঠানো হয়। ‘যদি যুদ্ধের মতো সংকট তৈরি হয় তখন কী করতে হবে তার বর্ণনা ছিল এই প্রচারপত্রে। ১৯৯১ সালের পর এরকম প্রচারপত্র বিলির ঘটনা এটাই প্রথম।

ফিনল্যান্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫৫ লাখ। দেশটিতে সামরিক বাহিনীতে ডাক পড়লে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক। জনসংখ্যার অনুপাতে সামরিক বাহিনী বেশ বড়, ও বেশ প্রশিক্ষিত। প্রতিবছর ফিনল্যান্ডে ২১ হাজার মানুষকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ও তাদের রিজার্ভ বাহিনীর সংখ্যা প্রায় নয় লাখ। দেশটির যুদ্ধকালীন সেনা সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজারের মতো বলে অনুমান করা হয়।

সুইডেনের সামরিক ক্ষমতা অবশ্য ফিনল্যান্ডের চেয়ে অনেক কম। তাদের সৈন্য সংখ্যা মাত্র ৫৭ হাজার। কিন্তু ২০১৮ সালে সুইডেনেও সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে এই নিয়ম বাতিল করা হয়েছিল। এখন বছরে ছয় হাজার মানুষের ডাক পড়ে সামরিক বাহিনীতে। ২০২৫ সাল হতে এটি বাড়িয়ে আট হাজার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন>প্রমোদতরী থেকে বাইচের নৌকা, বিশ্বের বৃহত্তম যত নৌযান

সুইডেন তাদের সামরিক বাহিনীর আকার ছোট করতে থাকে ১৯৯০ এর দশক হতে। তখন থেকে তাদের সামরিক বাহিনী দেশ রক্ষার চাইতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমেই বেশি মনোযোগ দিয়েছে। কিন্তু রাশিয়া যখন ২০১৪ সালে ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে ক্রাইমিয়া দখল করে নিলো, তখন সুইডেন তাদের এই নীতি পরিবর্তন করে। কারণ বাল্টিক অঞ্চলে তখন রাশিয়ার দিক থেকে নতুন হুমকি তৈরি হয়।

সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ১৯৯৪ সাল থেকেই ন্যাটোর আনুষ্ঠানিক সহযোগী দেশ। তখন তারা নেটো জোটের বিভিন্ন কার্যক্রমে বড় অবদানও রাখছে। স্নায়ু যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সুইডেন ও ফিনল্যান্ড কয়েকটি ন্যাটো মিশনে অংশগ্রহণও করেছে।

তবে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার পর সুইডেন ও ফিনল্যান্ড সংস্থার আর্টিকেল-৫ অনুযায়ী পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাবে। কারণ ন্যাটোর এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জোটের যে কোনো একটি দেশের ওপর আক্রমণ সব সদস্য দেশের ওপর আক্রমণ বলে গণ্য হবে।

ইতিহাসবিদ হেনরিক মেইনানডার বলেন, ফিনল্যান্ডের জনগণ ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিল। কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ন্যাটো সদস্য হওয়ার লক্ষ্যে ফিনল্যান্ড ধারাবাহিকভাবে বেশ কিছু ছোট ছোট পদক্ষেপ নিয়েছে।

১৯৯২ সালে ফিনল্যান্ড ৬৪টি যুদ্ধ বিমান কিনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। তিন বছর পর তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়। তার পর হতে ফিনল্যান্ডের প্রতিটি সরকার ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়টি সব সময় বিবেচনায় রেখেছে।

ন্যাটোর সদস্য হতে হলে কোনো দেশকে জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে হয়। ফিনল্যান্ড এরই মধ্যে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে। আর সুইডেন ২০২৬ সালের মধ্যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২ শতাংশ করার লক্ষ্য ঠিক করেছে।

স্নায়ু যুদ্ধের সময় সুইডেন হয়তো নিরপেক্ষ ছিল, তবে সেই সময়েও তারা বাল্টিক সাগরের দ্বীপ গোটল্যান্ডে ১৫ হাজার সেনা মোতায়েন রাখতো। এখন সুইডেন আবার সেখানে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে শুরু করেছে। সুইডেন আশা করছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তারা তাদের নিয়মিত সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করতে পারবে, বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রিজার্ভ সেনা সংখ্যাও বাড়াতে পারবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশ্বাস ন্যাটোর এই সম্প্রসারণ তার দেশের জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি। তিনি দাবি করেন, এজন্যেই তিনি ২০২২ সালে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালান। কিন্তু তার এই কাজের আসলে উল্টো ফল হয়েছে, কারণ এর ফলে ন্যাটোর সম্প্রসারণ আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।

বিশেষ করে ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানের ঘটনা রাশিয়ার জন্য বড় ধাক্কা। এর ফলে বাল্টিক অঞ্চলে ন্যাটো জোটের প্রভাব অনেক বাড়লো। অন্যদিকে এর ফলে ক্রেমলিন হুমকি দিচ্ছে, তারা এখন পাল্টা ‘সামরিক-কারিগরি’ ব্যবস্থা নেবে। তবে সেটি কি, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলেনি ক্রেমলিন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড এই দুটি দেশকেই ন্যাটোতে যোগ দিলে তার পরিণতি কী হবে সে ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে।

তুরস্কের সবুজ সংকেতের পর ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পথে এখন সুইডেনের সামনে আর কোনো বাধা নেই। তবে ক্রেমলিন বলছে, ফিনল্যান্ডের বেলায় তারা যা বলেছিল, সুইডেনের ক্ষেত্রেও তারা একই ধরনের ব্যবস্থা নেবে।

রাশিয়ার এসব ব্যবস্থা কী হতে পারে তা এখনো অস্পষ্ট। রাশিয়া বলছে, তারা তাদের কিছু কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র বেলারুসে নিয়ে গেছে। সেখান থেকে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড এসব অস্ত্রের আওতার মধ্যে আসবে।

তবে সাবেক ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার স্টাব হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, রাশিয়া হয়তো সাইবার হামলা, মিথ্যে প্রচারণা ও মাঝে-মধ্যে আকাশসীমা লঙ্ঘনের মতো ব্যবস্থাই বেশি নেবে।

আর্টিকেল ৫ অনুযায়ী ফিনল্যান্ডের এরকম নিরাপত্তার গ্যারান্টি এখনই আছে। অন্যদিকে সুইডেনও শীঘ্রই এরকম অঙ্গীকার পাবে। কারণ ন্যাটোর কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে, চুক্তি অনুযায়ী সব দেশকে সেই দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। অন্যদিকে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন নেটোতে যোগ দেওয়ার ফলে নরডিক ও বাল্টিক অঞ্চলের প্রতিরক্ষার ব্যাপারটি এখন আরও পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল।

তবে এই দুটি দেশেই, বিশেষ করে সুইডেন, জনগণের সংখ্যালঘিষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ মনে করে, ন্যাটোর সদস্য হওয়ার পর বরং এর উল্টো প্রভাব পড়বে।

সুইডিশ পিস অ্যান্ড আরবিট্রেশন সোসাইটির ডেবোরাহ সলোমন বলেন, পরমাণু অস্ত্র দিয়ে শত্রুপক্ষকে নিরস্ত করার ন্যাটোর কৌশলটি বরং উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র প্রতিযোগিতার ঝুঁকি তৈরি করছে। তার মতে, এর ফলে শান্তি প্রচেষ্টার পথ জটিল হচ্ছে। সুইডেনকে তা আরও নিরাপত্তাহীন করে তুলছে।

আরেকটি আশংকা হচ্ছে, এই জোটে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে সুইডেন বিশ্বে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের আন্দোলনে তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকা হারাতে পারে। ন্যাটোর ব্যাপারে সুইডেনের যেসব মানুষ সন্দিহান, তারা ১৯৬০ হতে ১৯৮০র দশকের মধ্যবর্তী সময়ের কথা স্মরণ করছেন। তখন সুইডেন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টায় মধ্যস্থতার জন্য তার নিরপেক্ষ অবস্থানকে কাজে লাগিয়েছিল।

তবে ফিনল্যান্ডের নিরপেক্ষতা ছিল ভিন্ন ধরনের। কারণ তাদের এই নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে হয়েছিল ১৯৪৮ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে এক ‘মৈত্রী চুক্তি’তে চাপিয়ে দেওয়া শর্তের কারণে। তখন ফিনল্যান্ডের টিকে থাকার জন্য ও তাদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য এটিকে একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হতো।

হেনরিক মেইনানডার বলেন, সুইডেনের জন্য এই নিরপেক্ষতা ছিল তাদের পরিচয় ও আদর্শের প্রশ্ন। অন্যদিকে ফিনল্যান্ডের বেলায় এটি ছিল টিকে থাকার প্রশ্ন। তিনি বলেন, সুইডেন যে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলতে পেরেছিল, তার কারণ হচ্ছে তারা ফিনল্যান্ড ও অন্যান্য বাল্টিক দেশকে ‘বাফার জোন’ হিসেবে ব্যবহার করতে পেরেছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর ফিনল্যান্ড তার নিরপেক্ষতার অবস্থান থেকে সরে আসে। তখন তারা পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে তাকাতে শুরু করে ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বলয় থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা শুরু করে।

এই দুটি দেশের সদস্যপদের ব্যাপারে তুরস্ক ও হাঙ্গেরিও কিছু আপত্তি জানিয়েছিল শুরুতে। তুরস্কের অভিযোগ ছিল, এই দুটি নরডিক দেশ, তাদের ভাষায়, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে সমর্থন করে। তুরস্ক আসলে কুর্দি চরমপন্থি দল পিকেকে ও গুলেন আন্দোলনের কথা উল্লেখ করছিল। তুরস্কে ২০১৬ সালে এক অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্য গুলেন আন্দোলনকে দায়ী করা হয়।

কুর্দিরা তুরস্কের মোট জনসংখ্যার ১৫-২০ শতাংশ। কয়েক প্রজন্ম ধরে তারা তুরস্কে কর্তৃপক্ষের দিক থেকে নিপীড়নের শিকার বলে অভিযোগ করে। তবে সুইডেনের ব্যাপারেই বেশি আপত্তি ছিল তুরস্কের। কারণ কুর্দিরা সুইডেনের রাজনীতিতে বহু দশক ধরে তাদের পক্ষে বেশ জোরালো অবস্থান গড়ে তুলেছিল।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এমন প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, ‘যে দেশের রাস্তায় এরকম সন্ত্রাসবাদীরা ঘুরে বেড়ায় সেই দেশ কীভাবে ন্যাটোতে অবদান রাখবে?

তার প্রধান দাবি ছিল, কুর্দিদের রাজনৈতিক, আর্থিক ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সমর্থন করা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।

সুইডেন ২০২৩ সালের জুনে তাদের সন্ত্রাসবাদবিষয়ক আইনে পরিবর্তন এনেছে ও যে কোনো ধরনের চরমপন্থি গ্রুপকে সমর্থন করা বা তাদের কাজে অংশগ্রহণ করা নিষিদ্ধ করেছে। এই আইনের পর এরই মধ্যে সেদেশে একজন কুর্দি পুরুষের জেল হয়েছে সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানোর অভিযোগে।

তবে তুরস্কের এই আপত্তির পেছনে নাকি ছিল অন্য কারণ। কেউ কেউ ইঙ্গিত করেছেন যে তুরস্ক আসলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল, সেটা না পাওয়া পর্যন্ত তারা সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্য করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে যাচ্ছিল। তুরস্ক অবশ্য একথা অস্বীকার করেছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএসএম