জাতীয়

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনি কাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট ইইউ: আইন সচিব

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের আইনি কাঠামো যথেষ্ট বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

Advertisement

বুধবার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ মূল্যায়ন করতে আসা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছয় সদস্যের নির্বাচনী অনুসন্ধানী দলের সঙ্গে বৈঠকে জিজ্ঞাসার জবাবে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এ কথা জানান। জবাবে প্রতিনিধি দল সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বৈঠক শেষে আইন সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সচিব বলেন, ‘আমাদের আইনগত কাঠামো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট কি না- এটা তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের যে আইনগত কাঠামো আছে, সেটা যথেষ্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) পাস হয়েছে, সেখানকার ৯১(১)এ-তে নির্বাচন বাতিল করার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ৯১-এএ যুক্ত করে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করেছেন। এটা ওটার আরও বাড়তি। ওনারা এতে সন্তুষ্ট হয়েছেন।’

আরও পড়ুন: যত খুশি পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে ইইউ, আপত্তি নেই ইসির

Advertisement

তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে আইন করা হয়েছে, উপমহাদেশে এ রকম আর কোনো আইন নেই।’

নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটির বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘তারা এটার বিষয়ে প্লিজড (সন্তুষ্ট) হয়েছেন। আইনটাও আমরা তাদের দিয়েছি।’

‘আরেকটি বিষয় তাদের জানিয়েছি, যেটি তারা হয়তো আগে জানতেন না। যেটি আমাদের আইন ও বিচার বিভাগের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত, সেটি হলো- নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একজন যুগ্ম জেলা জজ এবং একজন সিনিয়র সহকারী জজের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এটা তফসিলের শুরুর দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট নোটিফিকেশন হওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিয়ম বা কারও কোনো অভিযোগ থাকলে তারা সেটার প্রতিবেদন তৈরি করে নির্বাচন কমিশনকে দেন। নির্বাচন কমিশন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে।’

আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোর ইভিএম বিরোধিতায় অবাক ইইউ প্রতিনিধিরা

Advertisement

সচিব আরও বলেন, ‘এছাড়া আরেকটা বিষয় আছে জুডিসিয়াল অফিসারদের দেওয়া। বিচার বিভাগ স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন রিকুইজিশন দিলে আমরা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাচন কমিশনে ন্যস্ত করি। আমরা যখন নির্বাচন কমিশনে ন্যস্ত করি তখন আমাদের কাছে তাদের ইয়া নেই। তখন তারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনের আগে দুদিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পর দুদিনসহ মোট পাঁচদিন দায়িত্ব পালন করেন। তখন কোনো অনিয়ম হলে তারা সংক্ষিপ্ত বিচার (সামারি ট্রায়াল) ও আরপিওতে যে বিধানগুলো আছে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এটার বিষয়ে তারা প্রশংসা করেছে।’

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে তারা কোনো কিছু বলেছেন কি না- এ বিষয়ে গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘না, এসব নিয়ে কোনো আলাপ করা হয়নি।’

আরও পড়ুন: পলকের সঙ্গে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস প্রতিনিধি দলের বৈঠক

তারা কোনো পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘না, তারা জানতে চেয়েছেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এ আইনি কাঠামো যথেষ্ট কি না! আমরা বলেছি, হ্যাঁ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের মেকানিজম আছে, আইনি কাঠামো আছে। এ আইনি কাঠামো যথেষ্ট অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্য কোনো কিছু করার প্রয়োজন নেই।’

আরপিও সংশোধন নিয়ে তারা কিছু বলেছেন কি না- এ বিষয়ে সচিব বলেন, ‘আগের আরপিও অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা রয়েছে, তারা যে কোনো ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারে। পুরো নির্বাচনী আসনের ভোট বন্ধ করে দিতে পারবে।’

আরএমএম/বিএ/জিকেএস