দেশজুড়ে

সিলেট-তামাবিল সড়কে যান চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকেরা। সোমবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হয় এ ধর্মঘট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ধর্মঘট চলছে।

Advertisement

জানা গেছে, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে বাস আটকে রাখার প্রতিবাদে এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদকে গ্রেফতারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে।

এর আগে রোববার রাতে এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মইনুল হক।

আরও পড়ুন: সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে পরিবহন ধর্মঘট

Advertisement

বিকেলে মইনুল হক বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করা বাস ও মিনিবাস জৈন্তাপুরের দরবস্তে অবৈধভাবে আটকে রাখেন। এর জন্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা জৈন্তাপুর থানায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেই সঙ্গে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।

পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় বাসচাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পাঁচজন যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় গত শনিবার রাতে সিলেটের জৈন্তাপুর ১৭ পরগনার সালিস সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের দাবি ওঠে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কার্যক্রম শুরু করে সালিশ সমন্বয় কমিটি।

ফলে মহাসড়কটিতে চলাচল করা কয়েকটি বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল বাস চলতে না দেওয়ায় জৈন্তাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকেরা। অভিযোগে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ জাগোনিউজকে বলেন, সালিশ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেট তামাবিল মহাসড়কে রোববার থেকে কোনো ধরনের বাস-মিনিবাস চলাচল করতে পারেনি। তবে অন্য যে কোনো যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলছে। তিনি বলেন, আজ বাদ মাগরিব দরবস্ত জামে মসজিদে আবার ১৭ পরগণার মিটিং হওয়ার কথা আছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

তিনি বলেন, দরবস্ত বাজারে বাসচাপায় পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাস মালিক সমিতি বা এ রুটের পরিবহনের সঙ্গে জড়িত কেউই দুঃখ প্রকাশ করেনি। এমনকি আহত বা নিহতদের পরিবারের কোনো খোঁজখবরও নেননি তারা। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার রাতে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয় এবং সে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী আমরা বাস ও মিনিবাস চলাচল নিষিদ্ধ করেছি।

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এ ঘটনায় তিনি কোনো অভিযোগ পাননি। ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাস ও ট্রাকের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।

২০০৩ সালে জৈন্তাপুর-সিলেট বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধা দেওয়ায় বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার লোকজন যাত্রীবাহী-বাস ও মিনিবাস বর্জন করেছিলেন তিনমাস। তখন বাস রাস্তায় চললেও বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার লোকজন সেসময় বাসে চড়েননি। ওই এক অবস্থা এবারও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

ছামির মাহমুদ/আরএইচ/জেআইএম