আইন-আদালত

বিচারের সময় ভাবতে হয় যেন চোখের সামনে ১১শ লাশ

রানা প্লাজার ভবন মালিকের জামিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আমরা যখন বিচার করি তখন আমাদের এভাবেই ভাবতে হয় যে, ওই ভবন ধসের ঘটনায় মারা যাওয়া প্রায় ১১শ লাশ আমাদের চোখের সামনে।

Advertisement

সাভারের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানার জামিন আবেদনের শুনানি হয় আজ সোমবার (১০ জুলাই)।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে এ শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিষয়টি ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করে আদেশ দেন আদালত।

আরও পড়ুন: ফিরে দেখা রানা প্লাজা ট্রাজেডি

Advertisement

শুনানির সময় রানার আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ১০ বছর ধরে তিনি (রানা) কারাগারে। এখন তাকে জামিন দিন।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আরও ছয় মাস থাকুক।

এসময় আইনজীবী বলেন, ভবন তো তিনি ভাঙেননি, দায় রানার ওপর পড়ে না। এছাড়া রানা ব্যাংক থেকে লোনও নেননি।

আদালত বলেন, কিন্তু ভবন তো ধসে পড়েছিল।

Advertisement

আইনজীবী বলেন, জেনারেটরের কারণে বিল্ডিং ভেঙে পড়েছিল।

তখন প্রধান বিচারপতি আইনজীবীকে বলেন, আপনি (রানা) পালিয়েছিলেন কেন?

রানার আইনজীবী বলেন, চারদিকে মিডিয়া ও আশপাশের মানুষের কারণে।

আরও পড়ুন: আজও আঁতকে ওঠেন রানা প্লাজার সেই রেশমা

তখন রানার আইনজীবী ন্যায়বিচারের কথা বলে জামিন চাইলে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা যখন বিচার করি তখন আমাদের এভাবে ভাবতে হয় যে, এ ঘটনায় (রানা প্লাজা ধসে) মারা যাওয়া প্রায় ১১শ লাশ আমাদের চোখের সামনে। আর তাদের আত্মীয়স্বজনরা আরেক পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ন্যায়বিচার চাচ্ছেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের বিচার করতে হলে সবার বিষয় দেখতে হয়, বিচারপ্রার্থী নিরীহ মানুষ ও আসামির দিকটাও দেখতে হয়।

এরপর সর্বোচ্চ আদালত রানার জামিন বিষয়ে শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি করেন।

আরও পড়ুন: রানা প্লাজা ধসের পরও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেনি পোশাকশিল্প

রানার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে এর আগে তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরুউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সে জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন চেম্বারজজ আদালত। এরপর চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করেন রানা। সে আবেদনের শুনানি প্রথমে দুই মাস এবং আজ আবার ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করলেন সর্বোচ্চ আদালত।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজার ১০ তলা ভবন ধসে নিহত হন এক হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক। এ ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে সোহেল রানাকে যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে কারাগারে তিনি।

এফএইচ/জেডএইচ/জিকেএস