বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে করে দুর্ভোগ পোহাতে হয় জনসাধারণের। আর এসব ব্যপারে নজর নেই জনপ্রতিনিধিদেরও। তেমনি অবহেলিত ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যাত্রাসিদ্দি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা রসুল আহম্মেদ নামের কাঁচা রাস্তাটি।
Advertisement
দেখলে মনে হবে, এটি রাস্তা নয় ধানের চারা রোপণের জন্য হাল চাষ করা হয়েছে। রাস্তাটির এমনই বেহাল দশা যে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এমনকি হেঁটে চলাচলেরও কোন অবস্থা নেই। প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী ও মুরগির খামারিরাসহ স্থানীয়রা।
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধার নামে সংযোগ রাস্তা থাকলেও এ রাস্তায় এখনো কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এতে করে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
আরও পড়ুন: রাস্তা নয়, যেন মরণফাঁদ!
Advertisement
যাত্রাসিদ্দি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর আহাম্মদ, একরামুল হক, বেলাল, আবদুল্লাহ ও সিরাজ জানান, এ এলাকায় ২০০ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোকের বসবাস। কিন্তু দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়। পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাড়িয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে রাস্তা পানির নিচে ডুবে থাকে, পানি সরে গেলে রাস্তা কাদা হয়ে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজে যেতে কষ্ট হয়, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে কোলে করে নিতে হয়। রাস্তার বিষয়ে অনেকবার চেয়ারম্যান, মেম্বারদের কাছে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আমাদের এলাকার কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী ও অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কালিদহ হাইস্কুলের শিক্ষার্থী সাহাব উদ্দিন বলেন, আমাদের এ এলাকা থেকে দেড়শ ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন স্কুলে ও মাদরাসায় যায়। বর্ষাকালে এ কাঁচা রাস্তা দিয়ে কাদাপানি মাড়িয়ে স্কুলে যেতে আমাদের কষ্ট হয়। অনেকসময় গায়ের জামা কাপড় কাদাপানিতে নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাটি দ্রুত পাকা করে দিলে এলাকাবাসীসহ সবার উপকার হবে।
ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুকদেব নাথ তপন বলেন, রাস্তাটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। এখানে রয়েছে স্কুল-মাদরাসা, মসজিদ, মন্দির ও হিন্দুদের শ্মশান। কিন্তু কাঁচা রাস্তার কারণে বর্ষায় চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমি চাই মুক্তিযোদ্ধা রসুল আহাম্মদের প্রতি সম্মান রেখে, জনগণের কথা চিন্তা করে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে শহর রক্ষা বাঁধে ধস, বন্যা আতঙ্কে মানুষ
Advertisement
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন মিন্টু বলেন, আমার ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধা রসুল আহাম্মদ, নুর নবী ও মাস্টার আবুল হাশেমের নামে তিনটি কাঁচা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টি হলে এসব রাস্তায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। জনসাধারণ ও গাড়িচালকদেরকে সীমাহীন কষ্ট করতে হয়। আমি ওয়ার্ডবাসীর পক্ষ থেকে রাস্তাগুলো পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্থানীয় চেয়ারম্যান, এমপি ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে কালিদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম বলেন, ইউনিয়নের মুল সড়কগুলোর উন্নয়ন হয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে আরও ২২টি কাঁচা রাস্তা চিহ্নিত করে নতুন আইডিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে আবেদন জমা দিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই এসব রাস্তা পাকাকরণের কাজ শুরু হবে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেএস/এমএস