যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি যাওয়া ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে ফিলিপাইনে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার সরিয়ে নিয়েছিল হ্যাকাররা। মঙ্গলবার ফিলিপাইনের সিনেটের তদন্ত কমিটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানিতে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে দেশটির রিজাল ব্যাংকের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে এসেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম ইনকোয়ারারের এক প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটির বরাত দিয়েছে বলা হয়েছে, ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার স্থানান্তরের সময় মাকাতি শহরের জুপিটার রোডের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রহস্যজনকভাবে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। পরে ওই টাকা এই ব্যাংক হয়ে দেশটির কয়েকজন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে স্থানীয় ক্যাসিনোতে যায়। সিনেটের তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান টিওফিস্তো গুইনগোনা বলেন, সুবিধাজনকভাবে ওই দিন ব্যাংকের ক্যামেরা কাজ সচল ছিল না। সিনেটের এই কর্মকর্তা বলেন, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বন্ধ থাকার ঘটনা নিশ্চিতভাবে সন্দেহজনক। সিনেটের ব্লু রিবন কমিটি টাকা চুরির ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। এরই মধ্যে দেশটির মুদ্রা পাচারবিরোধী সংস্থাও তদন্তের স্বার্থে গত ৫ ফেব্রুয়ারির আরসিবিসি ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ ঘটনায় ৬ ব্যবসায়ীর জড়িত থাকার বিষয়েও তদন্ত করবে এই কমিটি। গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করে হ্যাকাররা।কমিটি বলছে, আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিটের শাখা থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ওই ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যাংকটির আরো চারটি শাখায় স্থানান্তর করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আরসিবিসি ব্যাংকের মুদ্রা পাচারবিরোধী প্রধান কর্মকর্তা লরিন্দা রোগারোর কাছে অানুষ্ঠানিকভাবে ওই দিনের ফুটেজ চাওয়া হয়েছে।বিশেষ করে ওই দিন অর্থ স্থানান্তরের জন্য মাইকেল ফ্রান্সিসকো ক্রুজ, জেসির ক্রিস্টোফার ল্যাগরোসাস, আলফ্রেড স্যানটোস ভারগারা এবং এনরিকো তিয়োদোরো ভ্যাসকুয়েজ ও উইলিয়াম সো গোর নামে পাঁচ ব্যক্তির ব্যাংক আকাউন্ট পর্যালোচনা করতে চায় কমিটি। আরসিসি ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ স্থানান্তরে কারা জড়িত ওই দিনের ফুটেজ পেলে সেই রহস্যের দ্বার উন্মোচন হবে। এছাড়া আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার রোডের শাখার ব্যবস্থাপক তার দায়িত্বে অবহেলা করেছেন কিনা সে চিত্রও উঠে আসবে বলে তদন্ত কমিটির প্রধান মন্তব্য করেছেন। সিসিটিভি হঠাৎ করে অর্থ চুরির আগের দিনে কেন অকেজো হয়ে পড়েছিল সেবিষয়ে জানতে চেয়েছে তদন্ত কমিটি। আরসিবিসি ব্যাংকের মুদ্রা পাচারবিরোধী প্রধান কর্মকর্তা লরিন্দা রোগারো এর জবাবে তদন্ত কমিটির কাছে বলেন, এর আগেও ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি সিসিটিভি অকেজো হয়ে পড়েছিল। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ আরসিবিসি ব্যাংকে পাচারের আগের দিন পুনরায় ব্যাংকের ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়ে। এসআইএস/এবিএস
Advertisement