জাতীয়

এনআইডির তথ্য ফাঁস নিয়ে সাইবার ইউনিট কাজ শুরু করেছে

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ফাঁসের বিষয়টি নিয়ে সাইবার ইউনিটগুলো কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

Advertisement

রোববার (৯ জুলাই) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইট থেকে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে নাগরিকদের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর। মার্কিন প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এনআইডি সেবা আমাদের অধীনে আসেনি, আমরা এখনো কার্যক্রম শুরু করিনি। এখনো এ কার্যক্রমটা নির্বাচন কমিশনের হাতেই রয়েছে। যে ঘোষণাটা (এনআইডি সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত) দেওয়া হয়েছে, আইনি কিছু জটিলতা রয়েছে, সেগুলো শেষ করে শিগিগর এটা আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আসবে। তখন থেকে আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করতে পারবো।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের তথ্য ফাঁস

তিনি বলেন, আপনি যে বিষয়গুলো (তথ্য ফাঁস) বলছেন, সেটা আমরাও শুনছি। এ বিষয়ে আমাদের‌ বিস্তারিত জানতে হবে, জেনে আপনাদের উত্তর দিতে হবে। এ মুহূর্তে আমাদের কাছে বিস্তারিত নেই। আপনারা যেভাবে শুনেছেন আমরাও ঠিক সেরকমভাবে শুনছি। না জেনে উত্তর দেওয়ার মতো তথ্য আমার কাছে নেই।

‘কি ঘটেছে কতখানি কি ফাঁস হয়েছে- সেটা আমাদের দেখতে হবে। দেখে যদি দেখি, কেউ এর সঙ্গে যুক্ত আছে, কেউ এতে সহযোগিতা করেছে- সেক্ষেত্রে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা আমরা নেবো। এক্ষেত্রে আমরা কাউকে ছাড় দেই না। সেটা আপনারা দেখেছেন। পুরো বিষয়টি আমরা জেনে নিয়ে তদন্ত করে এটার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘শুরু করার মতো কোনো উপাদান এখন আমাদের হাতে আসেনি। আমরা প্রস্তুত হয়েছি জানার জন্য। আমাদের সাইবার ইউনিটগুলো এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।‌ আরও তথ্য জানার জন্য।’

Advertisement

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কী ফাঁস হয়েছে, আমাদের প্রোটেকশনের কী আছে, সেটা আমাদের দেখতে হবে। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অর্পণ হতে যাচ্ছে। আমরা সেই ব্যবস্থা নেবো। কোনো ফাঁক-ফোকর থাকবে না। প্রোটেকশনের ব্যবস্থা আমরা নেবো।’

আরও পড়ুন>> সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক হয়নি, দুর্বলতা ছিল: পলক

বিএনপি আগস্টে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে যাচ্ছে- সেই বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আগস্ট মাস সবসময়ই জঙ্গিগোষ্ঠী, স্বাধীনতাবিরোধীরা কিংবা যারা চক্রান্ত করে তারা আগস্ট মাসকে বেছে নেয়। আমরা ১৫ আগস্ট দেখেছি। ২১ আগস্ট আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বোমায় উড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। সারাদেশে ৬৩ জেলায় ১৭ আগস্ট বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা তারা করেছিল। কাজেই আগস্ট মাস তাদের খুব প্রিয় মাস। তারা আগস্টকেই বেছে নেয়। আমার মনে হয়, সেই ধরনের একটা ইঙ্গিত তারা (বিএনপি) দিচ্ছে কি না, তারাই জানেন।’

তিনি বলেন, ‘তারা যে রকমভাবে আন্দোলনের কথা বলছে। আমাদের জনগণ এরই মধ্যে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের কোনো আন্দোলনে জনগণ সমর্থন ও সহযোগিতা করছে না। তারা আন্দোলনের কথা বলছেন, বছরের পর বছর আন্দোলন বলছে, ওমুক দিন করবে, তমুক দিন করবে- এটা আমরা শুনেই আসছি। আন্দোলনে যদি জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকে। আন্দোলনে যদি জনগণ যুক্ত না হয়, সেটা কোনো আন্দোলনই হয় না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা আন্দোলনের কথা বলেছে। তারা যদি কোনো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয়, মানুষ হত্যার কোনো পরিকল্পনা থাকে, সেগুলোর আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী দেখবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

জাতীয় শোক দিবস পালনে নানা উদ্যোগ

আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সারা দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, এ দিনটি পালনে কোনো নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এলে, তা কীভাবে মোকাবিলা করা হবে; তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আলাপ শেষে বেশ কিছু সিদ্ধান্তি নিয়েছি।

তিনি বলেন, শোক দিবসে সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ ও গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। এসব এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

‘বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরা ধানমন্ডি ও বনানীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। জাতির পিতার সমাধিস্থলের অনুষ্ঠানসহ শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠন আয়োজিত সব অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ১৫ আগস্ট সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। এ ক্ষেত্রে পতাকা উত্তোলনে যথাযথ বিধি মানা হচ্ছে কি না; সেদিকেও নজর থাকবে। সামাজিকমাধ্যমে যাতে অপপ্রচার চালাতে না পারে, সেদিকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থাকবে।

আরএমএম/এএএইচ/জেএইচ