ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে এবার ঈদেও তেমন যাত্রীচাপ দেখা যায়নি। ফলে হতাশ লঞ্চমালিক ও শ্রমিকরা। বিগত বছরগুলোতে প্রতি ঈদের আগে এবং পরে লঞ্চে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও এবার ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে।
Advertisement
এই সময় লঞ্চগুলোতে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি যাত্রী চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে সে যাত্রী সংখ্যা আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পদ্মা সেতু চালুর আগে জমজমাট ছিল ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো। প্রতি ঈদের ছুটিতে এই রুটে লঞ্চের সংখ্যা যেমন বাড়তো কয়েকগুণ তেমনি লঞ্চগুলো থাকতো যাত্রীতে টইটুম্বুর। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পাল্টে যেতে শুরু করে এই রুটের প্রেক্ষাপট। দুই থেকে তিনটি লঞ্চের স্থলে এখন স্বাভাবিক সময় প্রতিদিন গড়ে একটি করে লঞ্চ চলাচল করে আর তাতেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পায় না লঞ্চগুলো। এছাড়া লঞ্চের অধিকাংশ কেবিনই থাকে ফাঁকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার ঈদের আগে এবং পরে গড়ে তিন থেকে চারটি লঞ্চ ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে চলাচল করেছে। আর এসব লঞ্চে বিগত বছরের মতো অধিক যাত্রী পরিবহন কিংবা লঞ্চের কেবিন পেতে ভোগান্তি পেতে হয়নি। সহজেই যেমন যাত্রীরা কেবিন পেয়েছেন, পাশাপাশি বিগত বছরগুলোতে যেমন কেবিনের জন্য নির্ধারিত ভাড়ার থেকে বাড়তি টাকা আদায় করা হতো সেই পরিস্থিতিরও পরিবর্তন ঘটেছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: যৌবন হারিয়েছে ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুট
শনিবার পটুয়াখালী লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে এমভি সুন্দরবন ৯, এমভি কাজল ৭, কুয়াকাটা ১ এবং এমভি জামাল ৫ ছেড়ে যায়। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে পটুয়াখালী ঘাট থেকে লঞ্চগুলো ছেড়ে যায় এবং পরদিন সকালে ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছায়।
এমভি কাজল ৭ এর কেবিন বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা মনির হোসেন বলেন, এবার ঈদে যাত্রীদের তেমন কোনো চাপ নেই। আর তেলের দাম বেশি থাকায় আসলে ভাড়া কমানো সম্ভব হয়নি।
লঞ্চযাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, আমি পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছিলাম। আসার সময় বাসে এসেছি, এখন যাওয়ার সময় লঞ্চে যাচ্ছি, এটি আমাদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা।
Advertisement
আরও পড়ুন: লঞ্চঘাটে হাহাকার
এমভি সুন্দরবন লঞ্চের যাত্রী কাওছার হোসেন বলেন, এই সময় বাসে গেলে কিছুটা জ্যামে পড়তে হয়। সে কারণে লঞ্চে উঠলাম, লঞ্চ যেহেতু খুব সকালে সদরঘাটে ভিড়বে সে কারণে খালি রাস্তায় ভোগান্তি ছাড়া বাসায় ফিরতে পারবো।
এমভি সুন্দরবন লঞ্চের সুপারভাইজার মো. ইউনুচ জানান, বর্তমানে পটুয়াখালী থেকে ঢাকাগামী লঞ্চের ভাড়া সিঙ্গেল কেবিন ১৩০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২৫০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া জনপ্রতি ৫০০ টাকা। তবে এবার ঈদে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পাওয়ায় লঞ্চমালিকদের লোকসান হয়েছে। যাত্রী একেবারেই কম।
পটুয়াখালী লঞ্চঘাটের সার্বিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে পটুয়াখালী নদীবন্দর কর্মকর্তা মামুন আর রশিদের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আব্দুস সালাম আরিফ/এমআরআর/এমএস