ইউক্রেন যদি শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয় অর্থাৎ, রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে না পারে, তাহলে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে জয়ী হলেও ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি দ্রুত অন্তর্ভুক্তির জন্য ন্যাটোর নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার জবাবেই কিয়েভকে এ সতর্কবার্তা দিলো হোয়াইট হাউজ।
Advertisement
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জেন-পিয়েরে বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই জোটের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মতো প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আর সে যোগ্যতা অর্জনের পূর্বশর্ত হলো দেশটির শাসনব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার। এ শর্ত পূরণ করতে না পারলে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে না।
আরও পড়ুন: তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন জেলেনস্কি
‘আমাদের প্রেসিডেন্ট বার বার বলেছেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই জোটের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সমান যোগ্যতা অর্জন করতে হবে ও সে যোগ্যতা অর্জনের প্রধান শর্ত হলো অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার।’
Advertisement
জেন-পিয়েরে আরও বলেন, এটি ছাড়াও জোটের সব সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সম্মতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াশিংটন বরাবরই ন্যাটোর ওপেন ডোর পলিসির প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জোটের সব সদস্যরাষ্ট্র সম্মতি দিলেই ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে পারে ইউক্রেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে জয়লাভের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি।
বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি ইউক্রেন। ২০২২ সালে দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি বৈশ্বিক সূচকে ১৪০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের অবস্থান ছিল ১২৯ তম। তাই ন্যাটোতে যোগদানের পূর্বশর্ত হিসেবে ইউক্রেনের কাছে দুর্নীতিমুক্ত ক্ষমতা কাঠামো চায় যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: কোরআন পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চায় অধিকাংশ সুইডিশ
গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ইউক্রেন বিভিন্নভাবে আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করছে যে ন্যাটোতে যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক কাঠামো ও সক্ষমতা তাদের রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো— সেই কাঠামো দুর্নীতিমুক্ত কি না।
Advertisement
আগামী ১১ থেকে ১২ জুলাই লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনাসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন হবে। সেই সম্মেলনে অতিথিরাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনেরও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কিয়েভ প্রত্যাশা করেছিল, এ সম্মেলনেই তারা ন্যাটোর পূর্ণ সদস্যপদ পাবে।
কিন্তু গত ২৭ জুন এস্তোনিয়ার রাজধানী তাল্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটো মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গ বলেন, চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরই ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে, তার আগে নয়। আর ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই রাশিয়ার বিরুদ্ধে জয়ী হতে হবে।
আরও পড়ুন: ওয়াগনার প্রধান এখন রাশিয়ায়
স্টলটেনবার্গের ওই বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে ন্যাটোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বসে কিয়েভ। জেলেনস্কি বলেন, এবারই পূর্ণ সদস্যপদ না দেওয়া হলে সম্মেলনে যাবেন না তিনি।
২০০৮ সাল থেকে ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে নিজেদের অবস্থান অপরিবর্তিত রেখেছে ন্যাটো। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কিয়েভ আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের আবেদন করলেও, সে প্রক্রিয়ার খুব সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে।
সূত্র: আরটি
এসএএইচ