আন্তর্জাতিক

কোরআন পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চায় অধিকাংশ সুইডিশ

সুইডিশ জাতীয় টেলিভিশন সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান এসভিটি পরিচালিত নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে কোরআণ পোড়ানোর ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা ও বিক্ষোভ হওয়ার পর সুইডিশ জনগণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে।

Advertisement

আন্তর্জাতিক নীতি তৈরিকারী ও সামাজিক গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ‘কান্তার পাবলিক’ দ্বারা পরিচালিত সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ বলেছেন, জনসমক্ষে যেকোনো ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানো নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। বিপরীতে ৩৪ শতাংশ বলেছে এ ধরনের কাজে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত নয়। বাকি ১৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ছিল সিদ্ধান্তহীন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) প্রকাশিত ওই ফলাফলে আরও দেখা যায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি সুইডিশ নাগরিক কোরআনসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন।

গত বুধবার (২৮ জুন) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি মসজিদের সামনে সালওয়ান মোমিকা নামে এক ব্যক্তি মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের একটি কপি পুড়িয়ে দেয়। সেসময় সুইডেন পুলিশ ওই ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেয়। সুইডেনের একটি আদালত সালওয়ানকে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দেয়।

Advertisement

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন এমন ঘটনা ঘটায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। বিশ্বব্যাপী সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এ ঘটনার প্রতিবাদে তেহরানে নিযুক্ত সুইডিশ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে। এছাড়া নিন্দা ও প্রতিবাদ চলছে পুরো আরব বিশ্বসহ অন্য মুসলিম দেশগুলোতে।

কোরআন পোড়ানোর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানায় মরক্কো, মিশর, ইরাক, জর্ডান, লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও ফিলিস্তিন।

এমনকি, এ ঘটনার নিন্দা জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। পশ্চিমা দেশগুলোকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা জানি, কিছু দেশ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান করে না। তারা এও বলে, কোরআন অবমাননা কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু আমাদের দেশে এটি আইনী ও সাংবিধানিক উভয়ভাবেই অপরাধ।

সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় শুক্রবার (৭ জুলাই) নতুন করে বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তার আগে পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন, এ ঘটনায় তিনি ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত।

Advertisement

এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা অহংকারী পশ্চিমা জনগণকে শিখিয়ে দেবো, মুসলিমদের পবিত্র মূল্যবোধকে অবমাননা করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হতে পারে না। এমনকি, সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি জারি রাখবে জানায় তুরস্ক।

বিশ্বব্যাপী সুইডেনের বিরুদ্ধে এমন প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠক করতে চলেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। সংস্থাটির এক মুখপাত্রে বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, এ সপ্তাহের শেষের দিকেই হতে পারে এ বৈঠক। পাকিস্তানের অনুরোধে এ বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।

কান্তার পাবলিকের মতামত বিভাগের প্রধান টোইভো সোজোরেনের দাবি, বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া সুইডিশ জনমতের পরিবর্তনকে প্রভাবিত করতে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা

এসএএইচ