আইন-আদালত

নির্বাচনী প্রচারণায় সিনিয়র সচিব: ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ

সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারণা ও উঠান বৈঠকে অংশ নেওয়ায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব খাজা মিয়ার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে নোটিশে সচিব খাজা মিয়াকে তার অবস্থান তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান এ নোটিশ পাঠান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব খাজা মিয়াকে নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব খাজা মিয়ার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবকে তা জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান।

গত ৫ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সচিবের নির্বাচনী প্রচার’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

ওই প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রণীত আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে ভোটের মাঠে নেমেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব খাজা মিয়া। আগামী নির্বাচনে নিজ এলাকা নড়াইল-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়ে শুরু করেছেন নির্বাচনী প্রচার। অথচ তার চাকরির মেয়াদ আছে আরও এক বছর। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তার অবসর গ্রহণের পর ৩ বছর পার হওয়ার আগে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় (রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ) বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে বা কোনো ধরনের সহায়তা করতে পারবেন না।’

অন্যদিকে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২-এর ১২ (১) (চ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের কোনো চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন বা অবসর গমন করেছেন এবং ওই পদত্যাগ বা অবসর গমনের পর তিন বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে। অর্থাৎ অবসর বা পদত্যাগের পর তিন বছর শেষ না হলে কোনো সরকারি চাকরিজীবী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে দায়িত্বরত খাজা মিয়ার সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৪ জুলাই। অন্যদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের জানুয়ারিতে। তবে সরকারি চাকরি ছাড়ার তিন বছর পর নির্বাচন করার বিধান হাইকোর্টে বাতিল হলেই স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান খাজা মিয়া। সেই লক্ষ্যেই নির্বাচনী এলাকায় উঠান বৈঠক, পথসভা ও জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন তিনি, যা সরকারি চাকরিবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

Advertisement

এফএইচ/এমএএইচ/জেআইএম