দুই টেক জায়ান্ট ফেসবুক-টুইটারের মধ্যে প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দুই সংস্থা একে অপরকে টেক্কা দেওয়ায় ব্যস্ত। সোশ্যাল মিডিয়া জগতের দুই শীর্ষ সংস্থার মালিকও বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় প্রতিযোগিতা করছেন। কিন্তু মেটা এবার যা করেছে, তাতে দুই টেক জায়ান্টের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বাড়লো।
Advertisement
টুইটারকে টেক্কা দিতে ‘থ্রেডস’ নামে প্রায় একই রকম অ্যাপ চালু করেছে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের মাদার কোম্পানি মেটা। এরই মধ্যে চালু হওয়ার প্রথম ৭ ঘণ্টার মধ্যে ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ব্যবহারকারী পেয়েছে অ্যাপটি। এর ফলেই অনেকে বলছেন, অ্যাপটির ফলে মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ ও টুইটারের মালিক ইলন মাস্কের মধ্য যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলমান, তা আরও বাড়বে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও জাপানসহ শতাধিক দেশে ব্যবহার করা যাচ্ছে মেটার নতুন এ অ্যাপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে অসন্তুষ্ট টুইটার ব্যবহারকারীদের ভালোভাবেই আকৃষ্ট করতে পারে ‘থ্রেডস’।
আরও পড়ুন: স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনছে নেদারল্যান্ডস
Advertisement
বুধবার (৫ জুলাই) ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এক পোস্টে লেখেন, থ্রেডসে স্বাগতম। আসুন এটি ব্যবহার করি। তিনি অ্যাপটিকে টুইটারের ‘বন্ধুসুলভ’ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আখ্যা দেন।
থ্রেডস লাইভ হওয়ার পরে ইনস্টাগ্রামে আরেক পোস্টে জাকারবার্গ লেখেন, যারা প্রথম দিন থেকেই এটি ব্যবহার করছেন, আমি তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। এটিকে বলা যেতে পারে।
টুইটারভক্তরা এক দিনে কতটি টুইট পড়তে পারবেন, তার অস্থায়ী সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার ঘোষণা আসার পরই মেটা থ্রেডস অ্যাপ চালু করলো। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট দিয়েই থ্রেডস অ্যাপে লগইন করা যাবে। চাইলে আবার আলাদাভাবেও ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা গবেষক-বিজ্ঞানীদের তালিকায় বাংলাদেশের ৯২৬২ জন
Advertisement
অর্থাৎ, ইনস্টাগ্রামে প্রবেশ না করেও অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে। ফলে ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজনে সহজেই অ্যাপটি উপভোগ করতে পারবেন। টুইটারের মতো থ্রেডস অ্যাপের সব পোস্টে লাইক, রিপোস্ট, রিপ্লাই এবং শেয়ারের সুযোগ রয়েছে।
অ্যাপে ব্যবহারকারীর ছবি ছোট ও বৃত্তাকারে দেখা যাবে। এখানেও টুইটারের মতো নীল টিক থাকবে। ছবি, ভিডিও ও লিঙ্ক যুক্ত করে স্ট্যাটাস দেওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, পোস্টে অন্য ব্যবহারকারীরা মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারবেন।
পছন্দের ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট অনুসরণও করা যাবে থ্রেডসে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মেটার এ অ্যাপ আত্মপ্রকাশ পেলে মার্ক জাকারবার্গ ও ইলন মাস্ক একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিতি পাবেন।
আরও পড়ুন: ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে ধোঁয়াশায় সুইডেন
গত বছরের অক্টোবরে ইলন মাস্ক টুইটার কেনার পর থেকেই বিভিন্ন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু কঠোর নিয়ম চালু করেন। টুইটার পরিচালনা পদ্ধতিতে আসে পরিবর্তন। তাই অনেকেই বৃহৎ এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছেড়ে অন্য প্ল্যাটফর্মে চলে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটারে ইলন মাস্ক এক পোস্টে বলেছিলেন, মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গে খাঁচার ভেতর লড়তে প্রস্তুত। বিষয়টি নজর এড়ায়নি ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটার প্রধান জাকারবার্গের। মাস্কের টুইটের জবাবে একটি স্ক্রিনশট ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে শেয়ার করে তিনি লেখেন, আমাকে জায়গার নাম পাঠাও।
আরও পড়ুন: মারামারি করতে প্রস্তুত মার্ক জুকারবার্গ ও ইলন মাস্ক
এর প্রত্যুত্তরে ইলন মাস্ক বলেন, ভেগাস অক্টাগন। অক্টাগন হলো আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউএফসি) প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত একটি খাঁচাবিশিষ্ট মঞ্চ। সাধারণত নেভাদার লাস ভেগাসে হয়ে থাকে এই লড়াই প্রতিযোগিতা।
সূত্র: বিবিসি
এসএএইচ