দেশজুড়ে

প্রচার-জনবল সংকট, থুবড়ে পড়েছে সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র

নীলফামারীতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছিল সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু প্রচার-প্রচারণা আর জনবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কার্যক্রম। রোগী না থাকায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে কেন্দ্রে থাকা এক চিকিৎসকসহ দুই কর্মচারীর।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শৈশব ও কৈশরকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, পুষ্টি বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, ছয় মাস পর পর কৃমিনাশক ওষুধ সেবনসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবা দেওয়ার জন্য প্রায় ৪০ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করা হয় সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রতিষ্ঠার পর কয়েক বছর এর কার্যক্রম ভালোভাবে চললেও বর্তমানে তা স্থবির হয়ে পড়েছে। কাগজে কলমে প্রতিদিন ১০-১২ শিক্ষার্থী চিকিৎসাসেবা নিলেও বাস্তবে জনমানব শূন্য থাকে কেন্দ্রটি ।

এদিকে কেন্দ্রটিতে দুইজন স্থায়ী চিকিৎসকসহ ৬ জনের জনবল কাঠামো থাকলেও তা দীর্ঘদিন থেকে খালি। বর্তমানে একজন চিকিৎসক, একজন ফার্মাসিস্ট ও অফিস সহায়কসহ মোট ৩ জন কর্মরত আছেন।

আরও পড়ুন: মাদকের টাকা না পেয়ে গলায় ফাঁস নিলেন যুবক

Advertisement

এছাড়াও প্রাথমিক, নিম্ন-মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক মিলে ১২৯টি বিদ্যালয় রয়েছে সৈয়দপুরে। এসব বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর অধিকাংশই জানেন না এই বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র সম্পর্কে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা জানান, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি সম্পর্কে বেশি প্রচার-প্রচারণা করলে শিক্ষার্থীরা সহজে সেবা নিতে পারবে।

সৈয়দপুর বিজ্ঞান সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে স্নেহা বলেন, আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে আমরা এই বিষয়ে জানি না। জানলে আমরা সেবা নিতে পারতাম। আমাদের বিভিন্ন সময়ে বাইরে ডাক্তার দেখাতে হয় অতিরিক্ত টাকা খরচ করে, সেটা বেঁচে যেত। আপনি জানালেন শুনলাম।

সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সম্রাট বলেন, আমাদের সৈয়দপুরকে বলা হয় শিক্ষা নগরী। এখানে হাজারো শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে। ইউনিভার্সিটি ও স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে। তবে এমন একটি সুযোগ সুবিধা আছে তা আমরা জানিই না। কর্তৃপক্ষ যদি একটা সাইনবোর্ড স্কুল বা কলজের সামনে দিত বা প্রচার প্রচারণা চালাতো আমরা জানতে পারতাম। অসুস্থ হলে বেশি ভিজিট দিয়ে অন্তত বাইরে ডা. দেখাতে হতো না।

অভিভাবক সামসুন্নাহার রুখাইয়াত বলেন, আসলে এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বাচ্চাদের তো এখন উঠতি বয়স। তাদের নানা সমস্যা হয়। বিশেষ করে মেয়েদের নানান সমস্যা দেখা দেয়, যা পরিবারেও বলতে পারে না অনেক সময়। কেন্দ্রটিতে সেবা পাওয়া গেলে ভালো হয়, এক্ষেত্রে প্রচার প্রচারণা বাড়তে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বগুড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, আহত ১২

শিক্ষক শামীমা সুলতানা বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির সুযোগ সুবিধা পেলে শিক্ষার্থীদের আর্থিক যে ব্যয় সেটি কমবে। বিশেষ করে গরীব অসহায় যে শিক্ষার্থী আছে তাদের সুবিধা হবে। আমরা দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছি এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির প্রচার প্রচারণা বাড়ানো হোক। তারা অ্যাসেম্বলিতে এসে বলতে পারে, পোস্টারিং করতে পারে, তবে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এবিষয়ে সৈয়দপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রুবাইয়া বিনতে ওয়াহেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমি সেবা প্রদানের পাশাপাশি স্কুলে গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি যাতে এখানে শিক্ষার্থীরা সেবা নিতে আসে। আমরা সেবা প্রদান করছি।

সিভিল সার্জন ডা. হাসিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় প্রেষণে একজন মহিলা চিকিৎসক দিয়ে চালানো হচ্ছে । স্থায়ীভাবে ডাক্তার নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে জনবল নিয়োগসহ প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়ানো হবে।

রাজু আহম্মেদ/জেএস/জেআইএম