কুড়িগ্রামে গাড়ল পালন করে ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছেন রফিকুল ইসলাম (৫২) নামের অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাসদস্য। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর বাড়িতে বেকার বসে না থেকে গাড়ল পালনে সময় কাটান তিনি। বর্তমানের তার খামারে ১০২টি গাড়ল রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের চরে মরুভূমির গাড়ল পালনে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত এ সেনাসদস্য।
Advertisement
রফিকুল ইসলাম চিলমারী উপজেলার অষ্টমির চরের চরশাখাতি গ্রামের বাসিন্দা।
রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবসর নেওয়ার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন গরু ও ভেড়ার খামার করার। পরে গাড়ল সম্পর্কে জেনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গাড়লের খামার গড়ে তোলেন। এজন্য দেশের অর্ধশতাধিক খামার ঘুরে হাতে-কলমে গাড়ল পালন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন। গাড়লের পরিচর্যা ও চিকিৎসা নিজেই করেন রফিকুল ইসলাম।
খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়ল পালন ছাগল বা ভেড়ার চেয়ে অনেক বেশি লাভজনক। কুড়িগ্রামের আবহাওয়া ও ভূ-প্রকৃতি গাড়ল পালনের জন্য উপযোগী। আমাদের চরে যেসব ঘাস হয় তা গাড়লের পছন্দের খাবার। এর মাংস ও দাম ভেড়ার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে এর খামার লাভজনক।’
Advertisement
একটি বাচ্চা ভেড়ার দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। একটি ভেড়া সর্বোচ্চ ৩০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু একটি খাবার উপযোগী গাড়ল এক মণ থেকে তিন মণের হতে পারে। রফিকুল ইসলামের খামারে ৭৮ কেজি ওজনের গাড়ল রয়েছে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে আমার খামারে যে ১০২টি গাড়ল রয়েছে তার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী এক বছরে এর থেকে মূলধন বাদে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা লাভ হবে ইনশা আল্লাহ।’
গাড়ল পালন দেখতে আসা কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, গাড়ল এ অঞ্চলে একেবারে নতুন। আগে কোথাও দেখিনি। রফিকুল ভাইয়ের কাছ থেকে জানলাম গাড়ল পালন খুবই সহজ। আগামী বছর থেকে গাড়ল পালন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোশারফ হোসেন বলেন, গাড়ল পালন অত্যন্ত লাভজনক। কুড়িগ্রামের ভূ-প্রকৃতি গাড়ল পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ভেড়ার তুলনায় গাড়লের মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি হয়।
Advertisement
ফজলুল করিম ফারাজী/এসআর/জিকেএস