দেশজুড়ে

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৪০

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ৪০ জন। আহতদের মধ্যে বিএনপি এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। এছাড়া ভাঙচুর হয়েছে ৭-৮টি মোটরসাইকেল। একই সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি ও যুবদলের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) দুপুরের দিকে উপজেলা সদরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

অষ্টগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তিতুমীর হোসেন সোহেলের গ্রেফতারের প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল দলটির। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অষ্টগ্রামের জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হন। দুপুরে সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যে বিএনপি কার্যালয়ের দিকে যেতে থাকেন। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি মিছিল ওই এলাকায় আসে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, বিনা উস্কানিতে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। এ হামলায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য-সচিব জুবায়ের হাছান ইয়ামিন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনা, উপজেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল হক শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাইফুল ইসলাম, রোকন মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক জাবেদ, দেওঘর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর, বাঙ্গলপাড়ার ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিনসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে হামলা চালান। পুলিশ উপস্থিত থেকে পেটানোর নির্দেশ দেয়। হামলায় আমাদের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

Advertisement

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম জেমস বলেন, বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল জিরো পয়েন্টে। আমরা সেদিকে যাইনি। আমাদের ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা অষ্টগ্রাম বাজার এলাকায় মিছিল করছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি আগামী চার তারিখে অষ্টগ্রামে আসবেন এ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমরা মিছিল করেছি। কিন্তু বিএনপির লোকেরা লাঠিসোটা নিয়ে অষ্টগ্রাম বাজারে প্রবেশ করে। তখন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের মিছিলে অতর্কিত হামলা করেন। এতে ছাত্রলীগের ১০-১৫ জন আহত হন। হামলার খবরটি যখন ছড়িয়ে পড়ে, তখন আমাদের আরও নেতাকর্মী আসেন। পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। ছাত্রলীগ কোনো হামলা করেনি।

এদিকে ঘটনার পর কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মাহাবুব আলম আক্তার, বাঙালপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলম, ইটনা উপজেলা যুবদল নেতা রিয়েল মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ।

অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুর্শেদ জামান বলেন, বিএনপির মিছিল থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উদ্দেশে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেধে যায় সংঘর্ষ। তখন পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

পুলিশের বিরুদ্ধে আনা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি বলেন, ঘটনার সূত্রপাত মূলত বিএনপির লোকজনই করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কারও পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

Advertisement

এসকে রাসেল/জেডএইচ/