কোরবানি ঈদ ও এর পরবর্তী বেশ কয়েকদিন ধরে সবাই কমবেশি গরু ও খাসির মাংসের বাহারি পদ খান। তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কারণে এ সময় নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অল্প পরিমাণে মাংস খাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
Advertisement
যেহেতু ঈদের পরে অনেকেই আত্মীয়দের বাড়িতে ঘুরতে যান ও বিভিন্ন দাওয়াতে উপস্থিত হন সেক্ষেত্রে সবখানেই মাংসের পদ থাকে খাবারের মেন্যুতে। এক্ষেত্রে কয়েকটি উপায় মেনে আপনি অতিরিক্ত মাংস খাওয়া এড়াতে পারেন।
আরও পড়ুন: ঘর থেকে মাংসের গন্ধ দূর করবেন যেভাবে
পরিমাণমতো খেতে হবে
Advertisement
যে কোনো খাবারই যদি আপনি পরিমাণমতো খান, তাহলে সব ধরনের খাবারও খেতে পারবেন আর শরীরও থাকবে সুস্থ। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া এড়াতে ও সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত হলো পরিমাণ মেপে খাবার খাওয়া।
কোরবানি ঈদে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়া হয়, তাই অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও থাকে অনেক। এর কারণ হলো একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে হজম করতে পারেন না অনেকেই।
ফলে পেট ফাঁপে, জ্বালাপোড়া করে, ব্যথা করে, বারবার পায়খানা হতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। যদিও কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেতে মানা নেই, তবে পরিমাণ বজায় রাখা খুবই জরুরি।
আরও পড়ুন: খাদ্যে বিষক্রিয়া এড়াতে মাংস যেভাবে সংরক্ষণ করবেন
Advertisement
এক্ষেত্রে শুরু থেকেই পরিকল্পনা থাকা উচিত। অন্যের বাসায়ও যথাসম্ভব কম খাওয়া উচিত। তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি, মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা ইত্যাদি কম খেতে হবে।
চর্বি এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত চর্বি খাওয়া এমনিতেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কোরবানির সময় এ বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, আমরা রান্না সুস্বাদু হবে মনে করে মাংসে বেশ কিছু চর্বি আলাদাভাবে যোগ করি, এমন ধারণা একেবারেই ভুল।
মাংসের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সবজি খাওয়া যেতে পারে। টাটকা সবজি পাকস্থলীকে সাবলীল রাখে। পরিমিতি বোধ যেখানে রসনা সংবরণ করতে পারে, সেখানে ভয়ের কিছু নেই। মাংসে তেল বা ঘিয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
আরও পড়ুন: ফুসফুসে ইনফেকশনের ৫ লক্ষণ
অন্যদিকে ভুনা মাংসের বদলে শুকনো কাবাব করে খান, কোমল পানীয় ও মিষ্টি একেবারেই কম খান। কোরবানির ঈদের সময়ও ভালো থাকা যায়।
একই সঙ্গে হালকা ব্যায়াম বা বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি কমিয়ে নিতে পারলে আরও ভালো। এসব বিষয় মাথায় রাখলে ঈদেও সুস্থ থাকতে পারবেন।
মাংস কতটুকু খাওয়া নিরাপদ?
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন প্রায় ২১ গ্রাম লাল মাংস খান তাদের তুলনায় যারা দিনে প্রায় ৭৬ গ্রাম লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস খান, তাদের অন্ত্রের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: ফ্রিজে মাংস কতদিন রাখা যাবে?
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এর নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা নিয়মিত ৯০ এর বেশি লাল বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খায়, তাদের কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো, ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। আনুমানিক একটা কম্পিউটারের মাউস বা একটি তাসের বান্ডিলের সমান টুকরো এই পরিমাণ মাংস খেতে পারবেন।
জেএমএস/জিকেএস